উম্মতের ফিকির ২২

“উম্মতের ফিকির নিয়ে আমি নিজের ঘটনা শেয়ার করছি ইনশাআল্লাহ।★ঘটনা১:- আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি আমাকে দ্বীনি পরিবার এবং পরিবেশে থাকার তৌফিক দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ। আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ি স্বামী তাবলীগ এর সাথে জড়িত আলহামদুলিল্লাহ। সে সুবাদে আমাদের বাড়ির পাশেই কিছুদিন আগে ইন্দোনেশিয়া থেকে জামাত আসলে আমি আমার শ্বাশুড়ির সাথে নিয়মিত সেখানে যাতায়াত করি।শেষের দিন যখন তারা চলে যাবে আমি ভাবছিলাম এমন কোনো আমল/ইবাদতের কথা যদি আমি তাদেরকে জানিয়ে দিতে পারতাম তাহলে অন্তরটা প্রশান্ত হতো।হয়তো আমার বলা আমল/ইবাদত সম্পর্কে তারা আগে থেকেই জেনে থাকবে কিন্তু যদি না জেনে থাকে!তাহলে আমি কিভাবে আল্লাহর অপার নেয়ামত পাওয়ার উপায় তাদের না বলে থাকতে পারি?আমাকে বলতেই হবে ইনশাআল্লাহ। বাড়িতে স্বামী কে বললাম আমাকে ইংরেজিতে আমার কথাগুলো ট্রান্সলেশন করে দিতে যদি আমি তাদেরকে বলার সুযোগ পায় কিন্তু সময়ের কারণে সেটা হয়নি।এদিকে আইওএম এর ২৪১১ ব্যাচের প্রথম অরিয়েন্টেশন ক্লাস শুরু হবে, যদি ক্লাস না করি তাহলে উস্তাদদের মূল্যবান নসিহত থেকে বঞ্চিত হবো।আর যদি আজকেই দূরদেশ থেকে আমার দ্বীনের বোনদের কে একটা আমল সম্পর্কে না বলে দিতে পারি তাহলে সবসময় এই অতৃপ্তি আমার ভেতরে রয়ে যাবে।তাই ইংরেজি না লিখেই চলে গেলাম বোনদের কাছে।তাদের ভাষায় কথা নলতে পারিনা,কি করে বুঝায় আমার সব কথা?শেষে আমি ইশারায় বোবা মানুষের মতো অভিনয় করে করে তাদেরকে ৩টা আমলের কথা বুঝালাম।তাহিয়াতুল ওযূ,জুমআর দিন।সূরা কাহাফ এবং প্রতি রাতে কুরআনের ১০০আয়াত পাঠের ফজিলত।কিছু ইংরেজি এবং বাকিটা ইশারা ইঙ্গিতে যতটুকু পারি বোনদের বুঝালাম। দেখলাম যে তারাও এগুলো জানে কিন্তু আমি যে তাদের কে বলতে পেরে সিওর হতে পেরেছি যে আমার বোনেরাও আল্লাহর রহমত কুড়ানোর পথ সম্পর্কে জানেন তখন আমার অন্তরটা প্রশান্ত হলো আলহামদুলিল্লাহ। সবকিছুর পর আমি জানিনা কতটুকু উপকৃত তারা হয়েছে কিন্তু আমি পুরো একটা দিন-রাত অস্থির থেকেছি কিভাবে আমি তাদের আমার কথাগুলো জানাবো সেটাই তাদের প্রতি আমার অন্তরে আমার রবের দেওয়া ভালোবাসা। বিদায়ের সময় চোখ ঝাপসা হয়ে গেলো আর জান্নাতে দেখা হবে এই দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে চলে এলাম বাসায়,,,,।
★ঘটনা২:-২৩শে জানুয়ারি মারছুুছ উস্তাদের উম্মতের ফিকির ক্লাস এর পর আমার ভেতরে একটা ঝড় শুরু হয়ে গেলো।কি করছি!কোথায় যাচ্ছি! আমি আমার অপর ভাইবোনের হক্ব এভাবে নষ্ট করছি! তাদের দ্বীনের দাওয়াত দেওয়া থেকে বঞ্চিত করে?আর আমি যদি এমনটাই করে থাকি তবে সবার আগে আমি আমার পরিবারের হক্ব নষ্ট করছি।পরিবারের দ্বীনের বুঝহীন আমার বাবা মা ভাই বোন তাদেরকে আমি জাহান্নামের দিকে এগিয়ে যেতে দেখছি অথচ তাদের জন্য আমার কোনো ফিকিরই নেই? আমি কান্না করতে লাগলাম। দৌড়ে গেলাম মনের কষ্ট শেয়ার করার কেউ নেই তখন।শ্বাশুড়ি মা কে ডেকে বললাম মা!আমি ত আমার বাবা মা কে দাওয়াত দেওয়ার মতো দাওয়াত দিইনা,দাওয়াত দিতে গেলে রেগে যায় অথবা একটু বলেই ভুলে যায়।আমি কি করবো?কি করে তাদের দ্বীন বুঝাবো?আমাকে সাহায্য করুন, আপনার ত বেয়াই বেয়াইন। আপনি আম্মাকে ফোন করে করে দ্বীন বুঝাবেন।আপনার ছেলে আমার বাবা ভাইকে বুঝাবে এবং একদম ততদিন যতদিন না তারা বুঝবে।আমি আমার ননাস ও তার পরিবারের কথাও বললাম।উম্মতের মধ্যে পরিবার ত আমাদের সংস্পর্শে তাই ঘর থেকেই দাওয়াত ও ফিকির শুরু করতে হবে। অনেক্ক্ষণ এসব নিয়ে কথা বললাম, আমার স্বামীকেও বললাম।এশা আদায়ের সময় সেজদায় প্রচুর কাঁদলাম রবের কাছে তাদের হেদায়েত এবং বিশ্বের সকল ভাই বোনের জন্য। আল্লাহর কাছে নিয়ত করলাম এখন থেকে রাসূল সাঃ এর সুন্নাহ অনুযায়ী ধৈর্য্য সহকারে আমি আমার পরিবারকে দাওয়াত দিবো,এবং প্রতিদিনের একটা অংশে আমার পরিবার এবং উম্মতের জন্য দু আ করবো ইনশাআল্লাহ। আল মুজিব(দুআ কবুলকারী)তিনি নিশ্চয়ই আমার দুআ একদিন না একদিন কবুল করবেনই ইনশাআল্লাহ। আমার পরিবারের জন্য হেদায়েতের দুআ করবেন উস্তাদ, হেদায়েত না দিয়ে যেন আল্লাহ আমার পরিবারের সদস্যদের মৃত্যু না দেন। “

অপেক্ষা করুন

0