উম্মতের ফিকির-১৩

উম্মতের জন্য প্রিয় নবীজীর ভাবনা: প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মৃত্যু বার্তা এলো। হযরত আজরাইল (আঃ) এসে দরজায় দাঁড়ালেন, অর্থাৎ মালাকুল মউত। জিবরাইল (আঃ) ভেতরে প্রবেশ করে বললেন, অনুমতি হলে মালাকুল মউত ভেতরে প্রবেশ করতে চায়। নবীজী বললেন, আসতে বলুন। মালাকুল মউত ভেতরে প্রবেশ করে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমি যখন থেকে মৃত্যুর দায়িত্ব লাভ করেছি তখন থেকে আজ পর্যন্ত জান কবজ করতে কারো অনুমতি গ্রহণ করিনি এবং ভবিষ্যতেও নেবো না কিন্তু আপনার ব্যপারে আপনার রবের ফায়সালা হলো, আমার হাবিব যদি অনুমতি দেয় তবেই ভেতরে প্রবেশ করবে অন্যথায় ফিরে আসবে। হে আল্লাহর রাসূল, যখন থেকে মৃত্যুর দায়িত্ব লাভ করেছি সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত কাউকে মৃত্যুবরণ করা না করার অধিকার দেয়া হয়নি এবং ভবিষ্যতেও দেয়া হবে না। কিন্তু আপনার ক্ষেত্রে আপনার রবের সিদ্ধান্ত হলো আপনি যতদিন ইচ্ছা দুনিয়াতে জীবিত থাকতে পারেন আর যেতে চাইলে মহান আল্লাহ তায়ালা আপনার সাহায্য কামনা করছে। হে আল্লাহর রাসূল বলুন আপনার সিন্ধান্ত কি? প্রিয় নবীজী জিবরাইল (আঃ) কে উদ্দেশ্য করে বললেন, আপনি গিয়ে আমার রবকে জিজ্ঞাসা করে আসুন, আমার মৃত্যুর পর আমার উম্মতের সঙ্গে কিরুপ আচরন করা হবে, তারপর আমি উত্তর দিবো। প্রিয় নবীজী মৃত্যুশয্যায় থেকে ভবিষ্যতে তার উম্মতের কি হবে তা জিজ্ঞাসা করছেন। কাদের জন্য, সেই লোকদের যারা প্রতিনিয়ত নবীজীর সুন্নতকে জবাই করে চলছে, সেই লোকদের যারা সুপারমার্কেটের প্রতিটি দোকানে নবীজীর সুন্নতের জানাযা নিয়ে বসে আছে, যারা ঘরে ঘরে নবীজীর জীবনের লাশ নিয়ে বসে আছে, সেই নবীর জীবনের লাশ যিনি মৃত্যুর সময়ও তাদের ভুলেন নি। জিবরাইল (আঃ) ফিরে গেলেন, উত্তর নিয়ে তিনি আবার ফিরে এলেন। বললেন হে আল্লাহর রাসূল, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তিনি আপনার উম্মতকে একাকি নিঃসঙ্গ ফেলে রাখবেন না,তিনি তাদের সঙ্গে থাকবেন। নবীজী বললেন, যাক আমি আশ্বস্ত হলাম! হে আমার আল্লাহ, এবার আপনি আমাকে নিজের কাছে ডেকে নিন আর আপনি আমার উম্মতের রক্ষনাবেক্ষনকারী হয়ে যান। জিবরাইল (আঃ) কাঁদতে শুরু করলেন এবং বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আজ আপনি মৃত্যুবরণ করে নিলেন তাই আজকের দিন আমারও দুনিয়াতে আগমনের শেষ দিন। আজকের পর ওহির ধারা বন্ধ হয়ে গেলো। তারপর মালাকুল মউত যখন তার দায়িত্ব পালন শুরু করলেন তখন নবীজী বললেন, নামাজ, দাস-দাসী এবং অধিনস্থগন অর্থাৎ হে আমার উম্মত তোমরা যথাযথভাবে নামাজ আদায় করো এবং দাস-দাসী এবং অধিনস্থদের সঙ্গে আচরনের আমি যে বিধান এবং আদর্শ রেখে যাচ্ছি তোমরা তা যথাযথ অনুসরন করে চলবে। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিটা মুহুর্তে তার উম্মতের ফিকির করতেন।

অপেক্ষা করুন

0