উম্মতের ফিকির ১১

“উম্মতের ফিকির:
সাল ২০২৪ ! সময় যত অগ্রসরমান ফিতনাহ তত ক্রমবর্ধমান। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই হাদীসটি প্রায়শই যখন পড়ে যায় মনে, “”এমন এক সময় আসবে যখন মুসলমানদের জন্য ঈমান ধরে রাখা, জ্বলন্ত কয়লা হাতের মধ্যে রাখার ন্যায় কঠিন হবে -তিরমিযি ২২৬০”” আর তখন হৃদয়ের গহীনে আরম্ভ হয় তোলপাড়।আজ মুসলিম উম্মাহ যেন দিশেহারা। আমরা ভুলে গেছি আমাদের রব মহান আল্লাহ রব্বুল আ’লামীনকে, আমরা ভুলে গেছি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দেখিয়ে যাওয়া দ্বীনের পথকে। এজন্য পথহারা, দিশেহারা, উদাসীন এই উম্মাহকে আলোর পথে আনতে আল কুরআন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ যা তিনি সর্বাবস্থায় আঁকড়ে ধরার তাগিদ দিয়েছেন,তা ব্যতীত আর কোন সহজ-সরল পথ নেই।
প্রাত্যহিক জীবনের কার্যকলাপ থেকে আমরা উম্মাহর প্রতি ফিকিরের বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারি। প্রতিদিন আমি ভার্সিটিতে যাচ্ছি,নিজ চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি :
– হালাল-হারাম বিষয়ে অজ্ঞতা ও উদাসীনতা
-বেপর্দা, ফ্রি মিক্সিং
-নাস্তিক্য মতাদর্শ চর্চা
-সমকামিতা, LGBTQ+ ইত্যাদি ভয়ানক ফিতনাহর সমর্থক
-শিক্ষকদের ডারউইনের বিবর্তনবাদ এর মতো ঈমান বিধ্বংসী মতবাদের প্রতি উৎসাহ প্রদান
– শিরক , কুফর, মুনাফিকি… ইত্যাদি ইত্যাদি নানান ঈমান বিধ্বংসী বিষয়াবলী যা অন্তর থেকে অশ্রুধারা প্রবাহিত করে অনায়াসেই।
হায়!! আমরা কোন দিকে দিনকে দিন ধাবিত হচ্ছি! বাসা থেকে শুরু করে রাস্তঘাট, শ্রেণিকক্ষ, ল্যাব,মাঠ যেদিকেই যাইনা কেনো শয়তান বিছিয়ে রেখেছে ফিতনাহ বা ঈমান চুরির মায়াজাল।যে মায়াজাল আমাদেরকে ভুলিয়ে দিচ্ছে তাকওয়া(আল্লাহভীতি)কে, দূরে সরিয়ে রাখছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ থেকে।এ অবস্থা শুধু ক্ষুদ্র পরিসরে বিরাজমান নয় বরং সমগ্র বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহর মাঝে তা ভাইরাসের মতো সয়লাব হয়ে গেছে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে।
উম্মতের এমন এক কঠিন পরিস্থিতিতে আমি যদি শুধু নিজের ঈমান -আমলের ফিকির নিয়ে মশগুল থাকি, আর আশেপাশের লোকজনের দ্বীনে ফেরা নিয়ে বিন্দুমাত্র ফিকির না করি তাহলে তো আমার অবস্থা হযরত মুসা (আ.) এর সেই আবেদের মতোই হলো যে কিনা শুধু একাকী ইবাদাত করছি কিন্তু উম্মাহকে চরম অবাধ্যতা থেকে মহান আল্লাহ তা’আলার পথে নিয়ে আসতে কোনো ফিকিরই করছিনা! তবে তো উভয়ের ওপর আল্লাহর লানত অবশ্যম্ভাবী। অতএব, মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার সন্তুষ্টির জন্য নিজেকে পরিশুদ্ধ করার সাথে সাথে উম্মতের ফিকিরে সর্বতোভাবে আত্মনিয়োগ করতে হবে,করে যেতে হবে দাওয়াতি কাজ, উম্মতের মাঝে স্থাপণ করতে হবে ঐক্যের সুদৃঢ় ভিত যা সমস্ত তাগূতের বিরুদ্ধে বিজয়ী হতে যোগান দিবে আল্লাহ তা’আলার সহায়তা।তবেই আমরা পাবো দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতা এবং পরিগণিত হবো আল্লাহ তা’আলার নিকটতম বান্দা হিসেবে,ইন শা আল্লাহ।
মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমাদের মাঝে উম্মতের ফিকির বাস্তবায়নের তাওফিক দান করুক আমীন।।

অপেক্ষা করুন

0