উম্মতের ফিকির ১০


মদিনার সকাল। ১২ রবিউল আউয়াল, হিজরি ১১ সাল। নবী করীম (সা:) কয়েক দিন ধরে তীব্র জ্বরে ভুগছিলেন। তাঁর শরীর দুর্বল, কণ্ঠ ক্ষীণ, কিন্তু হৃদয় পূর্ণ উম্মতের জন্য দুঃশ্চিন্তায়। আয়েশা (রা.) এর ঘরে শুয়ে আছেন নবীজি (সা:)। পাশে সাহাবারা কান্না চেপে বসে আছেন। হঠাৎ তিনি চোখ খুললেন, মুখে কোমল হাসি। তাঁর ঠোঁট থেকে ভেসে এল কেবল একটি কথা— “আস-সালাত,আস-সালাত…” (“নামাজ, নামাজ!”)

তিনি বারবার এই কথাই বলছেন। সেই সকালে সাহাবারা নামাজ পড়ছিলেন। নবীজি (সা:) একটু শক্তি সঞ্চয় করে চোখের পর্দা সরালেন। তাঁর মুখে হাসি, চোখে ভালোবাসা। সাহাবারা তাঁর হাসি দেখে এত খুশি হলেন যে মনে করলেন, নবীজি ﷺ হয়তো সুস্থ হয়ে উঠছেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর তিনি পর্দা নামিয়ে দিলেন— এটাই ছিল সাহাবাদের প্রতি তাঁর শেষ দৃষ্টি।

শেষ অসুস্থতায় তিনি বারবার বলছিলেন: “উম্মতী, উম্মতী…”। আল্লাহর কাছে দোয়া করছিলেন যেন তাঁর উম্মত ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়, হেদায়াতের ওপর থাকে।

আয়েশা (রা.) এর কোলের ওপর মাথা রেখে ধীরে ধীরে তিনি দোয়া করতে শুরু করলেন:“হে আল্লাহ! আমাকে উচ্চতম সঙ্গীদের কাছে পৌঁছে দিন।”

কিন্তু এর আগের মুহূর্তগুলোতেও তিনি বারবার সাহাবাদের বলছিলেন—“নামাজ রক্ষা করো, আর তোমাদের অধীনস্থদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো।”

রাসূলুল্লাহ ﷺ শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নিজের জন্য নয়, উম্মতের জন্য চিন্তিত ছিলেন। এমনকি কাল হাশরের ময়দানে কঠিন অবস্থায় যখন অন্যান্য নবী রাসুলগণ পর্যন্ত ইয়া নাফসী, ইয়া নাফসী বলবে, তখন আমাদের প্রাণের ইয়া উম্মাতী, ইয়া উম্মাতী বলতে থাকবেন। এটাই হচ্ছের রাসুলুল্লাহ সাঃ এর উম্মতের ফিকির। ইয়া আল্লাহ, রাসুলুল্লাহ সাঃ এর উম্মত হিসেবে, আমাদের মধ্যেও উম্মতের জন্য দরদ ঢেলে দেন। উম্মাহর খেদমতে আমাদের কবুল করেন

অপেক্ষা করুন

0