“উম্মতের ফিকিরের একটি ঘটনা তুলে ধরছি ইন শা আল্লাহ।
সালটা ২০২০। টগবগে কলেজ পড়ুয়া তরুনী রিমি। কথা-বার্তা, চাল- চলন,ভাব- ভংগিতে এক সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব। ক্লাসের এমন কোনো ছেলে নেই যে তার সংগ পেতে চায়না। এমনকি কলেজের প্রতিটা ছেলে তাকে প্রেমের অফার দেয়। মেয়েটি ছেলেদের এমন কর্মকাণ্ড দেখে মনে মনে খুব খুশি হয়। আর সেও চায় ছেলেদের সাথে মিশতে, তাদের কাছ থেকে প্রায়োরিটি পেতে।
এদিকে ক্লাসের খুব শান্ত-শিষ্ট মেয়ে হুমাইয়া। সে খুব ধার্মিক, সৎ সেই সাথে খুবই ব্যক্তিত্ববান একজন মেয়ে। সে কোন ছেলের দিকে তাকিয়ে পর্যন্ত দেখেনা। বলতে গেলে দ্বীনের ব্যাপারে সে খুব কঠিন এবং আল্লাহ ভীরু। তার ক্লাসমেট রিমির আচরণ, কথা -বার্তা দেখে সে খুব কষ্ট পায়। কারণ একজন পরিপূর্ণ মুসলিম কখনো চাবেনা তারই অন্য ফ্রেন্ড বেপোরোয়া চলাফেরা করুক। সে আল্লাহর কাছে নামাজ পরে, নফল ইবাদত করে রিমির জন্য দোয়া করে যাতে আল্লাহ তাকে এই জাহান্নামের পথ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।
একদিন হুমাইয়া রিমি মেয়েটির সাথে কথা বলে জানতে পারে সে ছোটো বেলা থেকেই এমন উশৃঙ্খল চলাফেরা করে, তার বাবা-মা তাকে কোনো রকম বাধা দেয়না। অতপর হুমাইয়া রিমিকে অনেক বুঝিয়ে বলে যে দেখো আমরা সবাই একদিন মারা যাবো, এই চেহারা, এই সৌন্দর্য একদিন সব মাটিতে মিশে যাবে। আর তুমি তো জানো আল্লাহ তায়ালা পর্দা করা ফরজ করেছেন। আল্লাহ সুরা আন নূরে বলেছেন,”” আর মুমিন নারীদেরকে বল, যেন তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার””। (আন -নূর)।৷
হুমাইয়া রিমিকে এভাবে বুঝানোর পর রিমি অনেক দিন ক্লাসে আসেনি। একদিব হুট করে হুমাইয়াকে চমকে দিয়ে রিমি কালো বোরখা,হাত মোজা- পা মোজা, নিকাব পরে ক্লাসে ঢুকে এবং হুমাইয়ার সাথে বসে। প্রথমে হুমাইয়া চিনতে পারেনি যে ও রিমি। তারপর রিমি বলতে লাগলো যে, “”আসলে হুমাইয়া বোন তোমার মতো কেউ আগে কখনো পর্দা করা,নামাজ পড়া,ইসলামের বিধিনিষেধ মেনে চলার কথা কেউ বলেনি। তোমার কথা গুলো আমি বাসায় গিয়ে অনেক ভেবেছি। আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করেছি এই ভেবে যে আমি না জেনে কতো গুনাহই না করেছি!!! আল্লাহ কি আমাকে ক্ষমা করে দিবেন!!!! নাকি আমাকে জাহান্নামেই থাকতে হবে। আমি সত্যিই তোমার কাছে শুকরিয়া আদায় করছি যে তোমার মাধ্যমে আমি আল্লাহকে চিনতে পেরেছি, তার বিধিবিধান জানতে পেরেছি, আলহামদুলিল্লাহ!!!
চলো আজকে থেকে আমরা সবাইকে দ্বীনের দাওয়াত দিবো ইন শা আল্লাহ। আল্লাহ আমাদের কবুল করে নিন আমিন।”