“””১৯৪১ মাল, আসবাহ ফিলিস্ক্রিন তখন ইহুদিদের পদভারে রক্তাক্ত। দুরন্ত বায়ুর বুকে সন্তানহারা মায়েদের আহাজারি। এতিম শিশুদের আর্তচিৎকার। অসহায় বৃদ্ধ আর বৃদ্ধাদের চোখে চোখে অশ্রুর বান। কৌমার্য ছিন্ন যুবতী আর তরুণীদের চোখে প্রতিশোধের লেলিহান আগুন। ঠিক তখন আসবাহ আল হারভিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন এক নবজাত সন্তান। আব্দুল্লাহ ইউসুফ আযযাম। পারিবারিক ঐতিহ্যে লালিত হন ইসলামী আকিদাহ-বিশ্বাসে। মহব্বত করতে শিখেন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে, আল্লাহর পথে জিহাদে রত বীর বাহাদুরদেরকে, সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তিদেরকে।
আখিরাতের চিন্তা-ফিকির আর শাহাদাতের তামান্না শৈশব থেকেই তাঁর চরিত্রে ফুটে উঠতে থাকে। আব্দুল্লাহ আযযাম একটু ব্যতিক্রমধর্মী – সদা গভীর, নিষ্ঠাবান, চিন্তায় ডুবে থাকা এক কিশোর। নিয়মানুবর্তিতা, সময়ানুবর্তিতা তাঁর চরিত্রকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলেছে। অল্প বয়সেই তিনি দাওয়াতের কাজ শুরু করেন।
ইসলামি চিন্তা-চেতনাকে মুসলমানদের মাঝে জাগ্রত করতে পেরেশান হয়ে পড়েন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠরত অবস্থাতেই ভাঁর অসাধারণ গুণাবলি দেয়ে শিক্ষকরা হতবাক হয়ে যেতেন। তারা ভাবতে থাকেন, আমাদের এ সন্তান কালের ব্যবধানে নিশ্চয়ই বড় কিছু হবে। হয়তো আল্লাহ তা’লা তাঁর দ্বারা ইসলামের সংস্কারের কাজ করাবেন। সুনামের সাথেই তিনি লেখাপড়া করতে থাকেন।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের লেখাপড়া সুনামের সাথেই শেষ করেন। ক্লাসে সবার চেয়ে ছোট হওয়া সরেও তিনি ছিলেন সবচেয়ে বেশি সুদর্শন ও মেধাবি। এরপর তিনি এগ্রিকালচারাল কাদরী কলেজে ভর্তি হন এনং সেখান থেকেই ডিয়োনা ডিগ্রি লাভ করেন। তারপর দক্ষিণ জর্দানের আদির নামক গ্রামে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন।
কিন্তু তাঁর পিপাসার্ত মন তখনো দিল অস্থির-উত্তলা। তাই দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে শরিয়াহ বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৬৬ সালে শরিয়াহ (ইসলামী আইন) এর ওপর বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৭ সাল। ইহুদিরা পশ্চিম তীর দখল করে নিল। রক্তে রজিত হল পশ্চিম তীর। চোখের সামনে দেখলেন, নির্যাতন আর নিপীড়নের ভয়াল চিত্র। বুক ফাটা আহাজারি, কান্না আর বিলাদের অসহনীয় বেদনায় টানটান করতে থাকে তাঁর হৃদয়। চোখেই জমাট বেঁধে যার অশ্রু। তিনি শপথ করলেন, না, আর নয়। ইহুদীদের দখলদারিত্বের অধীনে তিনি আর থাকবেন না।
দেড় বছর ফিলিপ্রিননের জিহাদে অভিবাহত করেন। অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে জিহাদে কার্যক্রম চালিয়ে যান। কিন্তু এসময় তিনি মানসিকভাবে প্রশান্ত ছিলেন না। কারণ তিনি দেখতেন, যারা ফিলিস্তিন জিহাদে রঙ ভারা ইসলাম থেকে অনেক দূরে। মাঝে মধ্যেই তিনি দুঃখ করে বলতেন, ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার জন্য এটা কোন ধরনের জিহাদ হচ্ছে, যেখানে মুজাহিদ ভাইয়েরা প্লেইং কার্ড, গান শোনা আর টেলিভিশনে অম্লীল খুবি দেখে রাত কাটিয়ে দিচ্ছো তিনি দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতেন, হাজারো মানুষের জনবহুল জায়গায় সালাতের জন্য আহ্বান করা হলে একেবারেই অল্প সংখ্যক লোক উপস্থিত হয় যাদের হাতের আঙ্গুলী দিয়ে গোনা সম্ভব, এদের দিয়ে কী জিহাদ হবো
তাই তিনি তাদেরকে ইসলামের পথে পরিচালিত করতে চেষ্টা করতেন। কিচে তারা তাঁকে প্রতিহত করত। বাধা দিত। একদিন তিনি এক মুজাহিদকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, ফিলিস্তিনের এ অভ্যুত্থানের সাথে কি দ্বীনের কোনো সম্পর্ক আছে? তখন সেই মুজাহিদ অত্যন্ত সুস্পষ্ট ভাষায় বলল, এই অভ্যুত্থানের পশ্চাতে দ্বীনের কোনো সম্পর্ক নেই। এ কথা শুনার পর তাঁর মন ভেঙে যায়। তিনি ফিলিস্তিনের রণাঙ্গন ত্যাগ করে সৌদি আরব চলে আসেন। জেদ্দায় অবস্থিত বাদশা আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বাত্রদের মাঝে ইসলামের নির্মল চেতনা ও জিহাদি জযবা সৃষ্টির লক্ষ্যে পাঠদানে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি তখন উপলব্ধি করতে পারেন, মুসলিম উম্মাহর বিজয় ফিরিয়ে আনতে পারবে ঐক্যবদ্ধ সশর বাহিনী। এ ছাড়া বিজয় সম্ভব নয়। তখন থেকে জিহাদ আর বন্দুক হয়ে যায় তাঁর প্রধান কাজ আর বিনোদনের সঙ্গী। তিনি অভ্যন্ত জোরালো ভাবায় যোষণা করতে থাকেন, আর কোন সমঝোতা নয়, নয় কোন আলাপ আর আলোচনা। জিহাদ আর রাইফেলই হবে সমাধানের একমাত্র পথ। ১৯৮০ সাল। হচ্ছে এসেছেন এক আফগান মুজাহিদ। সহসা তার সাথে দেখা হয়ে যায় ড. আব্দুল্লাহ আযযাম রহ. এর। কথার ভালে তালে সখ্যতা বৃদ্ধি দেল। একের পর এক শুনলেন আফগান জিহাদের অবিশ্বাস্য কাহিনীমালা। মুজাহিদদের ভ্যাগ, কুরবানী আর আল্লাহর সাহায্যের কাহিনীমালা শুনতে শুনতে ড. আব্দুল্লাহ আযযাম অভিভূত হয়ে যান। তিনি বুঝতে পারেন, এতোদিন ধরে তিনি এ পথটিই খুঁজে ফিরছেন। এরই ভালাশে আছেন। এরপর তাঁন মন অস্থির হয়ে উঠে। অশান্ত হয়ে উঠে।
তিনি বাদশাহ আব্দুল আজীজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার পেশা ত্যাগ করে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে চলে আনেন। শুরুতে তিনি ইসলামাবাদের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ইতোমধ্যে বেশ কিছু আফগান মুজাহিদ নেতার সাথে তাঁর সখ্যতা গড়ে উঠে। তখন আফগান জিহাদ সম্পর্কে তিনি বাস্তব তথ্য সংগ্রহ করেন। নানা বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। চলমান জিহাদের রূপরেখা অনুধাবন করেন। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে পুরোপুরিভাবে আফগান জিহাদে আত্মনিয়োগ করেন। হৃদয়-মন, মেধা-যোগাভা, অর্থ-সম্পদ সবকিছু অকাতরে উজাড় করে দান করেন। আত্মতৃষ্ণ শাইখ আব্দুল্লাহ আযযামের কণ্ঠ চিরে বার বার রাসূলের এই বাণীটি মুজাহিদদের মাঝে দাড়িয়ে পড়ত, “”””আহাহর পথে জিহাদের ময়দানে এক মুহূর্তে দাঁড়িয়ে থাকা ষাট বৎসর ইবাদতে দাঁড়িয়ে থাকার চেয়ে শ্রেষ্ঠ।””””
তারপর তা তাদের হৃদয়ে ছুঁয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করত। শাহাদাতের আশায় তাদের অস্থির করে দ্বাড়ত। ব্যাকুল করে দিত। আব্দুল্লাহ আযযাম ও তাঁর প্রিয় শিষ্য উসামা বিন লাদেন পেশোয়ারে অবস্থানকালে মুজাহিদদের সেবা সংস্থা বায়তুল আনসারে যোগ দেন। এ সংস্থা আফগান মুজাহিদদের সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করত। নতুন মুজাহিদদের পাকিস্তানে প্রশিক্ষণ দিয়ে আফগানিস্তানে সম্মুখ যুদ্ধে প্রেরণ করত। ইতোমধ্যে তিনি তাঁর পরিবারকেও নিয়ে আসেন। এরপর আব্দুল্লাহ আযযাম আরো সামনে অগ্রসর হলেন। জিহাদের প্রখম কাতারে গিয়ে শামিল হলেন। হাতে তুলে নিলেন অস্ত্র। ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লেন সম্মুখ লড়াইয়ে।
অসম সাহসিকতায় বীরের মত যুদ্ধ করতে লাগলেন। আল্লাহর রাহে জীবন দেওয়ার জন্য তিনি উতলা হয়ে উঠলেন। ছুটে চললেন এক ফ্রন্ট থেকে আরেক ফ্রন্টে। এক রণক্ষেত্র থেকে আরেক রণক্ষেত্রে। আহা এ যেন আরেক জীবন। এ জীবনের কোন মৃত্যু নেই। এর স্বাদ, রঙ আর প্রকৃতি একেবারে আলাদা। অনন্য। তিনি আফগানিস্তানের অধিকাংশ প্রদেশে ছুটে গেলেন। লোগার, কান্দাহার, হিন্দুকুশ পর্বতমালা, পাত্রশির উপত্যকা, কাবুল আর জালালাবাদে ছুটে চললেন বিরামহীন গতিতে। ফলে আফগান রণাঙ্গনের সাধারণ যোদ্ধা ও মুজাহিদদের সাথে তাঁর পরিচয় হয়। সখ্যতা হয়।
বন্ধুত্ব হয়। সবাই ভাঁকে তাঁর হৃদয়ের উদারতা, জিহাদী জযবা, আল্লাহর রাহে জীবন দেয়ার আকুতি, মুসলিম উম্মাহর দরদী ব্যক্তিত্বের কারণে মনপ্রাণ দিয়ে ভালবাসতে থাকে। মহব্বত করতে থাকে। এরপর তিনি আবার ফিরে আসেন পেশোয়ারে। বাস্তব অভিজ্ঞতায় এবার তিনি একেবারে টইটম্বুর। গোটা আমগান রণাঙ্গনের সমস্যা-সমাধান তাঁর মস্তিষ্কের কোষে কোষে। জিহাদের এই কাফেলাকে সঠিক পথে পরিচালনার ও চূড়ান্ত বিজয়ের পথে নিয়ে যাওয়ার তামান্নায় তিনি অধীর অস্থির। তাই মুজাহিদদের মাঝে সংস্কারমূলক বক্তৃতা দিতে শুরু করলেন। মুজাহিদদের পরিশুদ্ধ করতে লাগলেন। জিহাদের পথে নানা বিভ্রান্তির আলোচনা করতে লাগলেন।
বিভক্ত মুজাহিদদের গ্রুপগুলোকে একই কাতারে শামিল হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে লাগলেন। শাইখ আব্দুল্লাহ আযযামের সেই বক্তৃতা সংকলনই পরবর্তীতে ফি জিলানি মুরাতিত তাওবাহ’ নামক গ্রন্থে প্রকাশ করা হয়। আফগান মুজাহিদ নেতাদের মাঝে তাঁর প্রভাব দিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তাই সবাই তাঁকে হৃদয় দিয়ে ভালবাসতেন। তাঁর প্রস্তাব, পরিকল্পনাকে কেউ অগ্রাহ্য করতে পারতো না। এরপর তিনি মুসলিম উম্মাহকে জিহাদের ব্যাপারে জাগ্রত করার দিকে মনোনিবেশ করেন। আফগান জিহাদের পবিত্র আহ্বানকে বিশ্বময় ঘড়িয়ে দিতে ছুটে যান বিশ্বের বহু দেশে। সাক্ষাৎ করেন জাতীয় নেতৃবৃন্দ, রাজনীতিবিদ, চিন্তাবিদ, দার্শনিক ও সমাজসেবক ব্যক্তিত্বদের সাথে। সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে অগ্নিঝরা বক্তৃতা দিতে থাকেন। চারদিকে ঘুটতে থাকে অমল প্রবাহ।
তিনি দ্বীনের হিফাজতের জন্য, শত্রুদের হাত থেকে মুসলমানদের লুণ্ঠিত ভুমিকে উদ্ধারের জন্য ঘর থেকে বেরিয়ে জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করতে থাকেন। অবসরে তার কলমও ছুটতে থাকে। তিনি জিহাদ বিষয়ে বেশ কয়েকটি পুস্তকও রচনা করেন। যা এখনো পাঠককে আন্দোলিত করে। আলোড়িত করে। জিহাদের পথে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করে। পুস্তকগুলোর শীর্ষে রয়েছে- এসো কাফেলাবদ্ধ হই, আফগান জিহাদে আর-রহমানের নিদর্শনসমূহ, মুসলিম ভূমিসমূহের প্রতিরক্ষা ইত্যাদি। শহীদ ড. আব্দুল্লাহ আযযানের অবিরাম প্রচেষ্টা, মেহনত-মুজাহাদা সফলতার আলো দেখতে পায়। তিনি বিশ্বের মুসলমানদেরকে আফগান জিহাদের ব্যাপারে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে সক্ষম হন।
ফলে আফগান জিহাদ শুধু আফগান জনতার মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকে না। বরং তা আন্তর্জাতিক রুণ লাভ করে এবং বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মুসলমানরা আফগান জিহাদে অংশগ্রহণ করতে ছুটে আসতে থাকে। তারা ইহুদি-খ্রিস্টানদের হাতে নিপীড়িত-নির্যাতিত মুসলিম মা-বোনদের উদ্ধারে শপথ গ্রহণ করতে থাকে এবং প্রতোক লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে থাকে। তিনি তাঁর মানসপটে একটা চিত্রই এঁকেছিলেন। ভা হল, জিহাদের মাধ্যমে খিলাফতের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। তিনি বিশ্বাস করতেন এবং বারবার বলতেন, পৃথিবীর বুকে খিলাফত প্রতিষ্ঠার পূর্ব পর্যন্ত জিহাদ চালিয়ে যেতে হবে। তাই তিনি বহুবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার প্রস্তাবকে অনুষ্ঠ চিত্তে প্রত্যাখান করেছেন। আর দৃঢ়কণ্ঠে ঘোষণ্য করেছেন, তিনি ততক্ষণ পর্যন্ত জিহাদ চালিয়ে যাবেন যতক্ষণ পর্যন্ত হয় তিনি বিজয়ী হবেন, নতুবা তাঁকে হত্যা করা হবে। আফগান রণাঙ্গন দিল তাঁর স্বপ্নের চারণভূমি। ভাই তিনি বলতেন, আমি কখনও জিহাদের ভূমি পরিত্যাগ করব না, তিনটি অবস্থা দ্বাড়া। হয় আমি আফগানিস্তানে নিহত হব, নতুবা পেশোয়ারে নিহত হব, নতুবা হাত বাঁধা অবস্থায় আমাকে পাকিস্তান থেকে বহিষ্কার করা হবে।
একদিন মিম্বারে খুতবাহ দানকালে অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বললেন, ‘আমি মনে করি, আমার প্রকৃত বয়স হচ্ছে নয় বৎসর। মাড়ে সাত বৎসর কেটেছে আফগান জিহাদে আর দেড় বৎসর কেটেছে ফিলিস্থিন জিহাদে। এছাড়া আমার জীবনের বাকী সময়গুলোর কোনো মূল্য আমার কাছে নেই।’ তিনি আরও বললেন, জিহাদ পরিত্যাগ করা হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না এক আল্লাহর ইবাদাত করা হবে। জিহাদ চলতে থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত না সব নির্যাতিত মানুষকে মুক্ত করা হবে। জিহাদ চলতে থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের সম্মান ও লুন্ঠিত ভূমিগুলো ফিরিয়ে আনা হবে। জিহাদ হল চিরস্থায়ী মর্যাদার পথ।
১৯৮৯ সালের ২৪শে নভেম্বর। শুক্রবার। শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম যে পথ দিবে জুমআর নামায আদায় করতে যেতেন সে পথে শত্রুরা তিনটি বোমা পুঁতে রাখল। রাস্তাটি ছিল সরু। একটির বেশি গাড়ি তা দিয়ে অতিক্রম করতে পারত না। দুপুর ১২.৩০ মিনিটে শাইখের গাড়িটি ঠিক বোমা যেখানে পুঁতে রাখা হয়েছিল সেখানে এসে খামল। সে গাড়িতে ছিলেন শাইখ ও ভাঁর দুই ছেলে ইবরাহীম ও মুহাম্মাদ। তাঁর আরেক পুত্র তামীম আদনানী আরেকটি গাড়িতে করে পিছনে পিছনে আসছিল। শাইখ গাড়ি থেকে নেমে হাঁটা শুরু করলেন। আর তখনই বিকট শব্দ করে শত্রুদের পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরিত হল। বিস্ফোরণের ভয়াবহ আওয়াজে কেঁদে উঠল পুরো শহর। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লো। তারপরই মসজিদ ও আশপাশের মানুবেরা দৌঁড়ে এল। কিন্তু ইতোমধ্যে যা হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে। ঘটনাস্থলে তাঁর গাড়ির বিক্ষিপ্ত টুকরো ছাড়া আর কিছুই পেল না। বিস্ফোরণের ফলে শাইখের দুই ছেলের দেহ ১০০ মিটার উপরে উঠে গিয়েছিল। তাদের দেহ বিভির গাছের ডালে, বৈদ্যুতিক তারের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেল। কিন্তু আল্লাহ ভা’আলা শহীদ ড. আব্দুল্লাহ আযযামের দেহকে রক্ষা করলেন। দেহটি সম্পূর্ণ অঙ্কত অবস্থায় একটি দেয়ালের সাথে হেলান দেয়া অবস্থায় পাওয়া গেল। তখন তাঁর মুখ দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন। তাঁর শাহাদাতের সংবাদে চারদিকে শোকের ছায়া নেমে এলো। কান্নার রোল গড়ে গেল। মুজাহিদদের শিবিরে শিবিরে সেই কারা ছড়িয়ে পড়লো। স্বন্ধ হয়ে গেল তাঁর বন্ধু-বান্ধব আর নিকটতম ব্যক্তিরা।
“”””ওরা মুখের ঝুঁৎকারে আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তাঁর নূরের পূর্ণ বিকাশ ছাড়া আর কিছুই চান না, যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে।”””””””