“ইসলামের শুরুর দিন গুলো থেকে মুমিনগণের মধ্যে ঐক্য ছিল অপরিহার্য, যা ছিল ইসলামকে বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠিত করার পেছনে অন্যতম নিয়ামক। উম্মতের ঐক্যের ব্যাপারে চিন্তা করলে যাদের ঘটনা আমার মনে সবথেকে বেশী দাগ কাটে তারা হলেন মুহাজির ও আনসার সাহাবীগণ। যখন মুহাজির সাহাবীরা হিজরত করে মদীনায় আসলেন তখন আনসারদের ও অর্থনৈতিক অবস্থা খুব বেশী শক্তিশালী ছিলো না, তবুও তারা সানন্দে আল্লাহ ও তার রাসুলের আদেশ মেনে মুহাজির সাহাবীদেরকে নিজের পরিবার, সম্পদে শরীক করে নেন। কিন্তু বনী মুসত্বালাকের যুদ্ধে তুচ্ছ এক ঘটনা কে কেন্দ্র করে এক আনসার ও মুহাজির সাহাবীর মধ্যে ঝগড়া বেধে যায়। উভয়েই নিজের নিজের সাহায্যের জন্য মুহাজির ও আনসার সাহাবীদেরকে ডাকাডাকি শুরু করেন। তখন মুনাফিক আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই আনসারদেরকে বলল যে, ‘তোমরা মুহাজিরদেরকে সাহায্য করেছ এবং তাঁদেরকে নিজেদের সাথে রেখেছ। এখন দেখ তার ফল কি সামনে আসছে! অর্থাৎ, তোমাদেরই খেয়ে তোমাদেরকেই দাঁত দেখাচ্ছে! আর এর চিকিৎসা হল এই যে, তাঁদের জন্য ব্যয় করা বন্ধ করে দাও। দেখবে তাঁরা আপনা-আপনিই কেটে পড়বে। রাসূল ﷺ আনসার ও মুহাজির সাহাবীদের আসাবিয়্যাহ এর ভিত্তিতে এরূপ হাকডাক শুনে বলেছিলেন, “”আমি তোমাদের মাঝে থাকতেই তোমরা এসব জাহিলি যুগের হাঁকডাক শুরু করে দিলে! এগুলো ছেড়ে দাও। এসব দুর্গন্ধযুক্ত।” আল্লাহ তা’লা সুরা মুনাফিকুন এ ইরশাদ করেন “মুহাজিরদের রুযীর মালিক তো আল্লাহ। কারণ, সকল প্রকার রুযীর ভান্ডার তাঁরই কাছে। তিনি যাকে চান তা দান করেন এবং যাকে চান না বঞ্চিত করেন।মুনাফিকরা এই বাস্তবতাকে জানে না। তাই তারা মনে করে যে, আনসাররা যদি মুহাজিরদের প্রতি সাহায্যের হাত না বাড়ায়, তাহলে তাঁরা না খেয়ে মারা যাবেন।“
এখানে আলোকপাত করার বিষয় এই যে, প্রত্যেকের রিজক আল্লাহই পাঠান
আমাদের শুধু প্রয়োজন উম্মাহর ঐক্যের সৎ নিয়ত ও আন্তরিক প্রচেষ্টা। তাই এমন ফিতনার জমানা, যেখানে জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে মুসলিমদের ৫৭ টি দেশে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে, যখন আমার উইঘুরের ভাই, ফিলিস্তিনের ভাই , লেবানন কিংবা মিয়ানমারের মুসলিম ভাই প্রতিনয়ত অমুসলিমদের দ্বারা আক্রান্ত হয় আর আমরা অল্প কিছু সদাকা বা দুঃখ প্রকাশ করেই দায়িত্ব শেষ করি। কিন্তু এখনই যদি এই কৃত্রিম ভাগ উপেক্ষা করে প্রকৃতপক্ষেই উম্মাতকে একটি শরীরের মতো বিবেচনা করে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ না নেই তবে বিচার দিবসে জবাব দেয়া সম্ভব হবে কি?
“