“উম্মতের ঐক্য মানে হলো সব মুসলমানের মাঝে ভ্রাতৃত্ব, একতা ও ইসলামের মূলনীতিতে একসাথে চলা এবং এই ঐক্যের মধ্যেই কল্যাণ নিহিত। রসূলুল্লাহ (সা:) বলেন, “”আল্লাহর হাত জামাতের উপর। “” (তিরমিযী, হাদিস :২১৬৭) অর্থাৎ যারা ঐক্যবদ্ধ থাকে তাদের উপর আল্লাহর সাহায্য থাকে। আমার একটি ঘটনার মাধ্যমে খুব সহজেই উম্মতের ঐক্যের গুরুত্ব বুঝতে পারবো।
ঘটনা:খন্দকের যুদ্ধ ও ঐক্যের শক্তি
মদীনায় মুসলমানরা তখন খুবই দুর্বল অবস্থায় ছিল। চারদিক থেকে শত্রুরা মিলে আক্রমণের জন্য এগিয়ে আসছিল। মদিনার চারপাশ খোলা মাঠ, তাই প্রতিরক্ষা করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ল।
এই অবস্থায় সালমান ফারসী (রাঃ) একটি নতুন আইডিয়া দিলেনঃ“আমরা শহরের চারপাশে বড় বড় খন্দক (পরিখা) খুঁড়ে ফেলি। শত্রুরা ঘোড়া বা হাতি নিয়ে আসলেও পার হতে পারবে না।”সাহাবীরা এই পরামর্শ মেনে নিলেন। সবাই মিলে খন্দক খনন শুরু করলেন।নবীজী (সা:) নিজেও কুড়াল দিয়ে মাটি কাটতে লাগলেন। তাঁর পেটের ওপর দুটি পাথর বাঁধা ছিল ক্ষুধার তীব্র কষ্টে, কিন্তু তবুও তিনি মাটির বোঝা কাঁধে তুলছিলেন।সাহাবীরাও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে লাগলেন।
কেউ মাটি তুলছে, কেউ মাটি ফেলে দিচ্ছে, কেউ খাবার ভাগাভাগি করছে। ক্ষুধায় অর্ধমৃত হয়েও সবাই গান ধরলঃ
“আমরাই খোদার সৈনিক, নবীর সৈনিক,
আমরা একসাথে আছি, ভীত নই কোনো শত্রুকে।”এই ঐক্য ও পরিশ্রমের ফলেই মদিনার চারপাশে বিশাল খন্দক তৈরি হলো।শত্রুরা এসে অবাক হয়ে গেল। তারা ভাবতেও পারেনি মুসলমানরা এত ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন কৌশল নেবে। পরিশেষে মুসলমানরা বিজয় হলো।
ঐক্যবদ্ধ থাকলে শত্রুরা তাদের ক্ষতি করতে পারেনা। ঐক্য থাকার ফলে অনেক দুর্বল উম্মতও শক্তিশালী হয়ে যায়।বিভক্ত থাকলে শত্রুরা তার সুযোগ নেয়।”