উম্মতের ঐক্য ০৪

“রাসূলুল্লাহ (সা.) মক্কার কাফেরদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে যখন মদিনায় হিজরত করলেন, তখন সেখানে বিভিন্ন গোত্রের বসবাস ছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল আওস ও খাজরাজ গোত্র, যারা দীর্ঘকাল ধরে নিজেদের মধ্যে ঝগড়া ও যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত ছিল। এছাড়া, সেখানে ইহুদিদেরও তিনটি প্রধান গোত্র ছিল—বনু কাইনুকা, বনু নাদির এবং বনু কুরাইজা।
​রাসূল (সা.) মদিনায় এসে প্রথমে এখানকার অভ্যন্তরীণ কোন্দল দূর করার উদ্যোগ নেন। তিনি আওস ও খাজরাজ গোত্রের মধ্যে দীর্ঘদিনের শত্রুতা মিটিয়ে তাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন স্থাপন করেন। এই দুই গোত্রের লোকজন একে অপরের সঙ্গে এতটাই মিশে গিয়েছিল যে তারা আনসার (সাহায্যকারী) নামে পরিচিতি লাভ করে।
​এরপর তিনি মক্কা থেকে আগত মুহাজির (হিজরতকারী) সাহাবিদের সঙ্গে আনসারদের একটি অসাধারণ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। আনসাররা নিজেদের ঘরবাড়ি, সম্পদ ও ব্যবসা-বাণিজ্য মুহাজিরদের সঙ্গে ভাগ করে নেন। এমনকী, একজন আনসার সাহাবি তার অর্ধেক সম্পদ একজন মুহাজিরকে দিতে প্রস্তুত ছিলেন। এই ঘটনা ইসলামে ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্যের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।
​এভাবে, রাসূলুল্লাহ (সা.) মুসলিম, ইহুদি এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে একটি চুক্তিপত্র তৈরি করেন, যা মদিনার সনদ নামে পরিচিত। এই সনদের মাধ্যমে মদিনাকে একটি বহু-সম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়, যেখানে প্রত্যেক সম্প্রদায়ের অধিকার ও দায়িত্ব নির্ধারণ করা হয়। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি হয় এবং পারস্পরিক সম্প্রীতি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়।”

অপেক্ষা করুন

0