Answered: ১৫ আনা+ স্বর্ণ সাথে কর্যে হাসানা দেওয়া কিছু টাকা এবং হাতে কিছু নগদ অর্থ আছে। কুরবানী ওয়াজিব হবে কি না?

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বার-কাতুহ হুজুর

আমার বিয়ের জন্য ৮ আনা+ একটা কানের দুল ৮মাস আগে কেনা হয়েছে। আর একমাস (হয় নি এখনো) আগে রেগুলার ইউজের জন্য একটা ২ আনার+ দুল ও ৪ আনার+ চেইন কেনা হয়েছে যেটা আমি আর আমার মা ইউজ করছি। তারপর সাথে ১ আনার একটা আংটি বানাতে দেওয়া হয়েছে দুই একদিনের মধ্যে সেটা হস্তগত হবে। ৫ হাজার টাকা প্রায় দুইবছর যাবত কর্যে হাসানা দেওয়া আছে। সাথে আরো ৫হাজার ৭ মাস যাবত কর্যে হাসানা দেওয়া আছে কিন্তু এই টাকাটাও প্রায় একবছরের বেশি সময় যাবত আমার কাছে ছিল পরবর্তীতে কর্যে হাসানা দিয়েছি। এখন হাতে নগদ বলতে ২হাজার+ টাকা আছে। আর কুরবানী ঈদ আসার আগে আরো ২হাজার টাকা হাতে আসবে ইন শা আল্লাহ।
আমার প্রশ্ন হলো,
১) উপরের সার্বিক অবস্থা কোনো পরিবর্তন না হলে আমার উপর কি কুরবানী ওয়াজিব হবে?

২)যদি আমার হাতের নগদ অর্থগুলো খরচ হয়ে যায় তাহলে কি কুরবানী ওয়াজিব হবে?
৩)যেই টাকা কর্যে হাসানা দেওয়া হয় সেই টাকারও কি যাকাত আদায় করতে হয়?

৪) ধারে টাকা নিয়ে কি কুরবানী দেওয়া যায়? সেটা কি সহিহ হবে? যেহেতু আমার হাতে এখন খুবই কম নগদ আছে।

উত্তরটা তাড়াতাড়ি পেলে অনেক আসান হবে।
জাযাকাল্লাহু খইরন ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আখিরহ।

————-উত্তর————-

জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৮২৭৩, ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাকেম ৭৫৬৫-৭৫৬৬)
শরীয়তের বিধান হলো,প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।
আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। 
সুতরাং কাহারো কাছে যদি স্বর্ণের পাশাপাশি টাকা থাকে,তাহলে তার জন্য করনীয় হলো এই টাকা আর উক্ত স্বর্ণের মূল্য হিসেব করে সারে বাহান্ন ভরি রুপার সমমূল্য হয়েছে কিনা?
হলে তার উপর যাকাত,কুরবানী আবশ্যক হবে।
যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ হতে যিলহজ্ব মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্ত, এ সময়ের মাঝে কোনো সময়ে আপনি যদি সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি সমপরিমাণ মূল্যের মালিক হোন,আর তাহা যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত হয়,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে, নতুবা কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
(০১)
উপরের সার্বিক অবস্থা কোনো পরিবর্তন না হলে সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে।
(০২)
যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ এর আগেই যদি সম্পুর্ন টাকা খরচ হয়ে যায়,যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ হতে যিলহজ্ব মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত আপনার মালিকানায় যদি আর কোনো টাকা না থাকে,ঐ তিন দিনের মধ্যে যদি পাওনা টাকা উসুল না হয়,এবং আপনার মালিকানায় যদি কোনো রুপা না থাকে,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।
(০৩)
সেই টাকা উসুল হওয়ার পর তার যাকাত দিতে হবে। 
এক্ষেত্রে সেই টাকা উসুল হতে কয়েক বছর লেগে গেলে সেক্ষেত্রে হিসাব করে বিগত বছরগুলোরও যাকাত দিতে হবে। 
আরো জানুনঃ- 
(০৪)
হ্যাঁ, ধার করে টাকা নিয়ে কুরবানী দেয়া যাবে।

অপেক্ষা করুন

0