আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে,
১. কেউ যদি এমন কোন স্থানে থাকে যেখানে সাধারন পানি নেই।কিন্তু ব্যবহৃত কিংবা মিশ্র পানি আছে। ব্যবহৃত পানি কিংবা মিশ্র পানি তো নাজাসাত দূর করে কিন্তু পবিত্রতা অর্জন হয় না। তাহলে এই স্থানে সালাত আদায়ের জন্য কি তায়াম্মুম করতে হবে নাকি তখন ব্যবহৃত কিংবা মিশ্র পানি দিয়ে অজু করে সালাত আদায় করতে হবে?
২. আমাদের ফিখহুত ত্বাহারাত বইয়ে নাজাসাত সম্পর্কিত যে ছক আছে সেখানে দেয়া আছে যাদের গোশত খাওয়া যায় তাদের পায়খানা পেশাব নাজাসাতে খফীফা। আবার একটা লাইন আছে যেখানে লিখা গোশত খাওয়া হালাল এমন সকল পশুর মল মূত্র পবিত্র। কিন্তু আমাদের স্লাইডে দেয়া আছে নাজাসাতে গলীজা। এখানে কোনটা ঠিক?
৩. জন্মদিন উপলক্ষ্যে কি এতিম বা অসহায় মানুষদের খাওয়ানো যাবে কিংবা কিছু দেয়া যাবে? এজন্য যে এই দিনে সে পৃথিবীতে এসেছিল সেই আনন্দের যায়গা থেকে। ঠিক জন্মদিন উপলক্ষ্য না। এই দিনটা আমাদের জীবনে একটা স্মরনীয় দিন এজন্য।
————-উত্তর————-
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
إِذْ يُغَشِّيكُمُ النُّعَاسَ أَمَنَةً مِنْهُ وَيُنَزِّلُ عَلَيْكُمْ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً لِيُطَهِّرَكُمْ بِهِ وَيُذْهِبَ عَنْكُمْ رِجْزَ الشَّيْطَانِ–
“যখন তিনি আরোপ করেন তোমাদের উপর তন্দ্রাচ্ছন্ন তা নিজের পক্ষ থেকে তোমাদের প্রশান্তির জন্য এবং তোমাদের উপর আকাশ থেকে পানি অবতরণ করেন, যাতে তোমাদিগকে পবিত্র করে দেন এবং যাতে তোমাদের থেকে অপসারিত করে দেন শয়তানের অপবিত্রতা।” [সুরাহ আনফাল আয়াত ১১]
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে:
وَأَنْزَلْنَا مِنَ السَّمَاءِ مَاءً طَهُورًا–
“এবং আমি আকাশ থেকে পবিত্রতা অর্জনের জন্যে পানি বর্ষণ করি।” [সুরাহ আল ফুরকান : আয়াত ৪৮]
https://www.ifatwa.info/47372/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
ؤُ) لَا يَجُوزُ التَّوَضُّؤُ بِمَاءِ الْبِطِّيخِ وَالْقِثَّاءِ وَالْقَثَدِ وَلَا بِمَاءِ الْوَرْدِ وَلَا بِشَيْءٍ مِنْ الْأَشْرِبَةِ وَلَا بِغَيْرِهَا مِنْ الْمَائِعَاتِ نَحْوِ الْخَلِّ. هَكَذَا فِي فَتَاوَى قَاضِي خَانْ وَلَا بِمَاءِ الْمِلْحِ. هَكَذَا فِي الْخُلَاصَةِ وَلَا بِمَاءِ الصَّابُونِ وَالْحَرَضِ إذَا ذَهَبَتْ رِقَّتُهُ وَصَارَ ثَخِينًا فَإِنْ بَقِيَتْ رِقَّتُهُ وَلَطَافَتُهُ جَازَ كَذَا فِي فَتَاوَى قَاضِي خَانْ.
তরমুজ, শষা, কদু ইত্যাদির পানি দ্বারা অজু গোসল করা যাবে না।এবং ফুলের পানি দ্বারাও অজু করা যাবে না।এবং যেকোনো পানীয় শরবত দ্বারা অজু করা যাবে না। তাছাড়া আরো যত প্রকার পানীয় রয়েছে, যেমন সিরকা ইত্যাদি দ্বারাও অজু করা যাবে না। এবং লবনের পানি দ্বারাও অজু করা যাবে না।শাবান ইত্যাদির পানি দ্বারাও অজু গোসল করা যাবে না,যখন পানির পাতলা হওয়ার গুণ দূর হয়ে গিয়ে পানি গাঢ় হয়ে যাবে, তবে যদি সাবান মিশ্রিত পানিতে পানির পাতলা হওয়ার গুণাগুণ বাকী থাকে, তাহলে উক্ত পানি দ্বারা অজু গোসল হবে।
وَلَا بِمَاءٍ يَسِيلُ مِنْ الْكَرْمِ. كَذَا فِي الْكَافِي وَالْمُحِيطِ وَفَتَاوَى قَاضِي خَانْ وَهُوَ الْأَوْجُهُ. هَكَذَا فِي الْبَحْرِ الرَّائِقِ وَالنَّهْرِ الْفَائِقِ وَهُوَ الْأَحْوَطُ. كَذَا فِي شَرْحِ مُنْيَةِ الْمُصَلِّي لِإِبْرَاهِيمَ الْحَلَبِيِّ
আঙ্গুর থেকে যে রস বের হয়, সেই রস দ্বারাও অজু হবে না। গাছের পাতা পানিতে পড়ে যাওয়ার কারণে যদি পানির তিন গুণের (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২১)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ব্যবহৃত পানি দিয়ে অযু করা যাবেনা।
তবে প্রশ্নে যে মিশ্রিত পানির কথা রয়েছে,সেটা কোন পানি?
এটা পাক জিনিস দ্বারা হলে যদি পানির ৩টি গুনাগুন অক্ষুন্ন থাকে,বা ২ টি গুণ অক্ষুণ্ণ থাকে, সেক্ষেত্রে ঐ পানি দিয়ে অজু গোসল জায়েজ হবে। তবে সাধারণ পানি মওজুদ থাকলে,সেই পানি দ্বারাই অজু গোসল উত্তম।
তবে এত্থেকে স্বচ্ছ পানার খোজ পাওয়া গেলে সেই পানি দ্বারা অজু গোসল করাই উত্তম বলে বিবেচিত হবে।