আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। আমার কাছে মনে হয় উম্মতের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির সবচেয়ে বড় কারণের একটি হচ্ছে জবানের লাগামহীন ব্যবহার। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। আমাকে কেউ একটা কিছু বললে, তাকে আমার প্রতিউত্তর দিতেই হবে এমন মনোভাব আমাদের তৈরি হয়ে গিয়েছে। এছাড়া গীবতের মত বড় কবিরা গুনাহ তো আছেই। শাশুড়ি বউ কে নিয়ে বলছে, বউ শ্বাশুড়ি কে নিয়ে। মা, ছেলে মেয়ের কাছে ফুফুর বদনাম করছে। ফুফু তার ছেলে মেয়ের কাছে মামীর বদনাম করছে। এভাবে জবানের মাধ্যমে শুরু হচ্ছে গুনাহ, সেই গুনাহ শেষ হচ্ছে কবরে পৌঁছে। আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা কুরআনে বলেছেন, “…
একবার এক ব্যক্তি গভীর রাতে রাস্তায় মাতাল অবস্থায় পড়ে ছিল এবং চিৎকার করছিল: "তারা আমার আমানত নষ্ট করে দিয়েছে! তারা আমার আমানত নষ্ট করে দিয়েছে!" লোকটি আসলে মদ পান করে নেশাগ্রস্ত ছিল, তাই আশপাশের লোকেরা তাকে অবহেলা করছিল। কিন্তু মহান আলেম ইমাম আবু হানিফা (রহ.) যখন এই শব্দ শুনলেন, তখন তিনি তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, "তোমার আমানত কী? কে তা নষ্ট করল?" লোকটি কাঁদতে কাঁদতে বলল, "আমার ঈমান ছিল শক্তিশালী, কিন্তু শয়তান ও খারাপ সঙ্গ আমাকে ধ্বংস করে দিয়েছে! আমার ঈমানের আমানত আমি হারিয়ে ফেলেছি!" ইমাম আবু হানিফা (রহ.)…
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকা তুহ,, আল্লাহ সুবহানাল্লাহ তায়ালা চাইলে,, আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে "উম্মতের ফিকির " সম্পর্কে কিছু লিখার চেষ্টা করবো। "উম্মতের ফিকির " শব্দ দুইটা খালি চোখে দেখলে ছোট,, কিন্তু মনের চোখ দিয়ে দেখলে এটা বৃহৎ, আবার গভীর ও। যদি আমরা এর গভীরতা বুঝতে বা জানতে চায়, তাহলে আমরা ১৪০০ হাজার আগের যুগে যায় অর্থাৎ প্রানের প্রিয় নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগ। একদা, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনার একটা জায়গায় বসে বসে কান্না করতেছিল, এমতাবস্থায় সাহাবীরা নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ সাঃ…
ঘটনাটি একটি ইংরেজি গল্পের অনুবাদের সংক্ষিপ্ত রূপ। শীতপ্রধান দেশের একটি গল্প। একজন ইমাম ও তার ১০ বছরের ছেলেকে নিয়ে প্রতি জুম্মার পরে দাওয়াতি কাজে বেরিয়ে পড়তেন। আমাদের দেশের মতো সেখানে দাঁড়িয়ে বা কাউকে নিয়ে বসে ১০/২০ মিনিট বক্তব্য দেওয়ার সময় নেই। যে যার মতো ব্যস্ত থাকে দুনিয়ার তাড়নায়। তাই তারা দাওয়াতি লিফলেট বা ছোট কাগজের বই বানিয়ে সেটি হাতে হাতে ধরিয়ে দিতেন যেন বাসায় গিয়ে পড়তে পারে। শীতকালে সেখানে তুষার পড়ে। এক জুম্মায় প্রচুর তুষারপাত হচ্ছিল। ইমাম সাহেব আজকে আর বাইরে যাবেন না ঠিক করলেন। কিছু সময় পরে দেখতে পেলেন…
একবার এক বুজুর্গ আলেম তাঁর এক মুরিদকে (শিষ্য) নিয়ে মসজিদে বসেছিলেন। সেই সময় একজন সাধারণ মুসলমান এসে তাঁর সামনে বসে বলতে শুরু করলো, “হুজুর, আমার জীবনে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। পরিবারের মধ্যে অশান্তি, ব্যবসায় ক্ষতি, এবং জীবনে শান্তি নেই। আমি কী করতে পারি?” আলেম হুজুর কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলেন এবং তারপর ধীরে ধীরে বললেন, “তুমি আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রাখো এবং তাঁর দেওয়া পরীক্ষাগুলোকে মেনে নাও। কিন্তু এর পাশাপাশি, তোমার কাজ হলো তোমার উম্মতের (সমাজের) জন্য ফিকির (চিন্তা) করা।” লোকটি বিস্মিত হয়ে বললো, “হুজুর, আমি নিজের সমস্যাগুলোর মধ্যেই আটকে আছি, উম্মতের…
ফিকির মানে চিন্তা, ভাবনা, দরদ নিঃস্বার্থ ভালোবাসার এক বহিঃপ্রকাশ।উম্মতের ফিকির কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা রাসূল (সা:) এর জীবনাদর্শ থেকে জানা এবং তার সাহাবী, এরপর তাবেয়ী, তাবে তাবেয়ী,সালাফ এবং ইমামগনের জীবনী থেকে আমরা ফিকির সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা নিতে পারি। আমি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী,একদিন বাড়ি থেকে ক্যাম্পাসে আসার পথেবাসে, আমার কাছে খুব সামান্যই টাকা ছিল,বাসের হেল্পার যেখানে ৮০/৯০ টাকা ভাড়া সেখানে আমার থেকে ১৫০ টাকা নিয়েছিল, আমি পরিপূর্ণ পর্দা করি, উঁচু আওয়াজে কথা বলতে পারিনি, তবে হেল্পারের জন্য অনেক দুআ করেছিলাম ওইদিন,উনি বাবার বয়সি ছিলেন তারওপরে আবার দাঁড়ি ছিলো বেশ বড়-ই। আমি অনেক…
রাসুলুল্লাহ সাঃ এর তায়েফের ঘটনা রাসুলুল্লাহ সাঃ তায়েফে ১০ দিন অবস্থান করেন।এ সময় নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিগণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি ইসলামের দাওয়াত পেশ করেন। কিন্তু সকলের উওর একই তুমি এ শহর থেকে বের হয়ে যাও। ফলে ভগ্ন হৃদয়ে তিনি সেখান থেকে প্রত্যাবর্তনের প্রস্তুতি গ্রহণ করলেন। প্রত্যাবর্তনের পথে যখন তিনি পা বাড়ালেন তখন তাকে উত্যক্ত অপমানিত ও কষ্ট প্রদানের জন্য শিশু কিশোর ও যুবকদেরকে তাঁর পিছনে লেলিয়ে দেয়া হলো। তারা হাত তালি,অশ্রাব্য অশ্লীল কথাবার্তা বলে তাঁকে গাল মন্দ দিতে ও পাথর ছুঁড়ে আঘাত করতে থাকল। আঘাতের ফলে রাসুল সাঃ এর পায়ের গোড়ালিতে…
আসসালামু আলাইকুম। আল্লাহর রহমতে আমার কাছ থেকে দেখা একটি ঘটনা বলছি- সময়টা ছিল ২০২0সালের শেষের দিকে ইন্টার শেষ হওয়ার পরে ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পরে ক্লাসে গিয়ে দেখতে হলো সবাই মর্ডান ড্রেসে কিন্তু তাদের মাঝে যখন পর্দা সমেত ক্লাসে প্রবেশ করি বেশিরভাগ বোন বাকা নজরের আমার দিকে তাকাতে লাগলো তাই একাই গিয়ে সিটে বসলাম।এর কিছু সময় পরে একটা মর্ডান বোরকা পরিহিতা বোন এসে আমার সাথে বসার অনুমতি চাইলো আমি বসার অনুমতি দিলাম সালাম দিয়ে ক্লাস চলাকালিন সময় নজর হেফাজতের জন্য স্যারের দিকে আমি তাকালাম না সেটা আমার সেই বোন খেয়াল করে…
সেহরিশ তখন ইন্টারে পড়ে। নতুন নতুন কলেজে ভর্তি হয়েছে। প্রথম দিন কলেজে যেয়েই জিহা নামের এক মেয়ের সাথে পরিচয় হয়। মেয়েটা খুবই শান্ত প্রকৃতির। তাদের কথোপকথনের এক পর্যায়ে জিহা সেহরিশকে জিজ্ঞাসা করে যে সে আগে মাদ্রাসার স্টুডেন্ট ছিল কিনা। সেহরিশ প্রশ্নটির জন্য প্রস্তুত না থাকলেও প্রশ্নটি করার কারণ তার অজানা নয়। তার বেশভূষা দেখে অনেকেই ধারণা করে বসে যে সে মাদ্রাসা লাইনের স্টুডেন্ট। সেহরিশ জিহাকে জানাই যে; না, সে মাদ্রাসার স্টুডেন্ট ছিলনা। সেখানকার বাকিদের মতোই সেও জেনারেল লাইনের স্টুডেন্ট। সে যখন নাইনে পড়তো তখন সে জানতে পারে ইসলামে নামাজ-রোযার মতো…
উম্মতের ফিকিরের ঘটনা বলতে গেলে আমি এমন একজন আলিমের কথা শেয়ার করবো যাকে দেখে সর্ব প্রথম অন্তরে দ্বীনের নূরের আলোকচ্ছটা বের হয়েছে রব্বে কারীমের ইচ্ছায়। সময়টা ২০১১ সাল, সদ্য এসএসসি পাশ করে 'গোপালগঞ্জ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ' এ ভর্তি হয়েছি। কলেজের পাশেই গোপালগঞ্জের বিখ্যাত দ্বীনিয়া মাদ্রাসা, চন্দ্রদিঘলিয়ায়। মাদ্রাসার মুহতামিম, মুহতারাম আব্দুল্লাহ সাহেব দা. বা., যাকে প্রথম দেখি কোন এক জুমুআয় খুব সম্ভবত অথবা ঐ মাদ্রাসারই মাহফিলে। প্রথম যখন তার নূরানী চেহারাটা দেখি তখনই অন্তরে এক অন্যররম শীতলতা অনুভব করি। আর যখন তার বয়ান প্রথম শুনি তখন মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুধু শুনতেই থাকি।…
"পাঁচ বন্ধু, উমর, আলি, আহমেদ, বিজয় ও কামাল। তাদের মধ্যে বিজয় ও কামাল হিন্দু হলেও বন্ধুত্বের গভীরতা বেশ অনেক। উমর সবাইকে রামাদানে ইফতারের দাওয়াত দিলে একদিন সবাই উপস্তিত হয়। হিন্দু হলেও কামাল ও বিজয় বরাবরই ইসলাম নিয়ে অনেক আগ্রহী। কথায় কথায় উমর সবাই এক সাথে হজ্বে যাওয়ার প্রস্তাব রাখে। এতে বিজয় বলে, “হ্যাঁ, আমি যেতে চাই। তোমরা আমার ভাইয়ের চেয়ে কম নও, তোমাদের সাথে মিশার পরে ইসলাম নিয়ে আমার অনেক ভুল-ভ্রান্তি ঠিক হয়েছে, পাশাপাশি তোমাদের ধর্ম যে শান্তির তাও আমি উপলব্ধি করতে পারি। তাহলে এবার চলো তোমাদের সর্বপ্রধান পবিত্র স্থান…
উম্মতের ফিকিরঃ- একদা শায়খ উসামা বিন লাদেন (রহি.)-এর এক সহচর ল্যাপটপে তাঁকে একটি ভিডিও দেখান। ভিডিওটি ছিল ধ্বংসস্তূপে পরিণত ফিলিস্তিনের একটি দৃশ্য। একটি ছোট্ট শিশু ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে শায়খের ছবি তুলে ধরেছিল। করুণ চাহনি নিয়ে সে ছবির দিকে ইঙ্গিত করে উচ্চস্বরে বলছিল, ❝উসামা, তোমার প্রতিশ্রুতি কখন পূরণ করবে? নিজের প্রতিশ্রুতি কখন পূরণ করবে তুমি?❞ এই দৃশ্য দেখে শায়খ নিজেকে সংবরণ করতে পারলেন না। ফুঁপিয়ে কান্না করছিলেন আর বলছিলেন, ❝পৃথিবীর আপন-পর সবাই যার শত্রু, বিশ্ববাসী যাকে হরহামেশা হত্যার পরিকল্পনা করছে, তার কাছে তুমি কী চাও?❞ কান্নায় তাঁর কণ্ঠ বুজে আসছিল। কাঁদতে…
গত দুইদিন যাবত পাশের বাড়ীর গানের শব্দে ঘুমানোও যাচ্ছে না। দৈনন্দিন কোন কাজও মন দিয়ে করতে পারছি না৷ গানের শব্দে দীলের মধ্যে এক অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতো জোরে ভলিউম যে অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমার কানে শব্দ চলে আসে। কি করবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ মনে পড়ে গেল আব্বাজান রহঃ কথা, তিনি এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে প্রতিবেশীকে বাসায় ডেকে এনে পাশে বসিয়ে সুন্দর করে নসীহা দিতেন৷ তাঁরাও আব্বাকে খুব সমীহ করতেন। আব্বার নসীহা শুনে গান বন্ধ করে দিতেন। ভাবলাম আমিও তাই করবো। দাওয়াত দিবো। হিদায়াতের মালিক তো আল্লাহ। তিনি কখন কাকে…
উম্মতের জন্য প্রিয় নবীজীর ভাবনা: প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মৃত্যু বার্তা এলো। হযরত আজরাইল (আঃ) এসে দরজায় দাঁড়ালেন, অর্থাৎ মালাকুল মউত। জিবরাইল (আঃ) ভেতরে প্রবেশ করে বললেন, অনুমতি হলে মালাকুল মউত ভেতরে প্রবেশ করতে চায়। নবীজী বললেন, আসতে বলুন। মালাকুল মউত ভেতরে প্রবেশ করে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমি যখন থেকে মৃত্যুর দায়িত্ব লাভ করেছি তখন থেকে আজ পর্যন্ত জান কবজ করতে কারো অনুমতি গ্রহণ করিনি এবং ভবিষ্যতেও নেবো না কিন্তু আপনার ব্যপারে আপনার রবের ফায়সালা হলো, আমার হাবিব যদি অনুমতি দেয় তবেই ভেতরে প্রবেশ করবে…
একদা একটি গ্ৰামে কোনো একটা সময়ে সেই গ্ৰামের অধিকাংশ যুবক গান বাজনাসহ নানান হারাম কাজে জড়িয়ে পড়ে। তাঁরা দ্বীন থেকে অনেকটাই দূরে চলে যায়। তাদের এমন অবনতি দেখে সেই গ্ৰামের অল্প সংখ্যক দ্বীনি ভাইয়েরা উম্মাতের ফিকিরের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাঁরা পথভ্রষ্ট এই উম্মাহর মাঝে দ্বীন প্রচার শুরু করে। তাদের বিভিন্ন ভাবে দ্বীনের দাওয়াত দিতে শুরু করে। দ্বীনি ভাইদের এই দাওয়াতি কাজে অনেক বাধা বিপত্তি আসতে থাকে। অনেকেই তাদের নানান খারাপ কথা বলতে থাকে, তাদের সাথে খারাপ আচরণ করতে শুরু করে।এই আচরণে দ্বীনি দাওয়াতি কাজে যুক্ত ভাইদের মনে সূক্ষ্ম দাগ কাটে।…
আমি আসিফ, মাদকে আসক্ত ছিলাম। দ্বীনের পথে এসেছি, আল্লাহ তায়লার হিদায়াতে। পড়াশোনা, ইবাদাত, দ্বীনের চর্চা করেই সময় যাচ্ছে। এক শুক্রবারে, জুম্মার নামাযে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই বন্ধুদের দেখতে পেলাম তারাও নামাযে যাচ্ছে যাদের ত্যাগ করেছিলাম খারাপ সঙ্গ বলে। তাদের একজন আমাকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে আসে এবং টুকটাক কথা শেষে মসজিদে গেলাম এক সাথে। নামায শেষে ইমাম সাহেব খুতবা দিচ্ছেন, সবাই বসে শুনছি, একসময়ে তিনি বলেন, “হে আমার শ্রেষ্ঠ নবী (সা.)-এর উম্মাতেরা, আমি কি আপনাদের এমন কিছু জানিয়ে দিবো, যার মাধ্যমে ১৪০০ বছর আগে না জম্নেও প্রিয় রাসুল (সা.)-এর সেবা করতে পারবেন?”…
আল্লাহ তায়ালা বলেন, "তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে শক্ত করে আকরে ধরো পিথক হয়ো না।" সূরা ইমরান :১০৩ শান্তি শান্তি বিজয়ি বিজয়ি শান্তি বিজয়ি কোথাতে এটাতো আছেতো ভাই মুসলিম উম্মাহের ঐক্য তে নবি করিম (সা) আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন তোমরা মুসলমান তোমরা একে অপরের ভাই ভাই। কিন্তু আজ আমরা মুসলিম হয়েছি ঠিকই কিন্তু আমরা ঐক্য, একতাবদ্ধ নই। আমরা দেখছি বর্তমান বিশ্বে ইহুদি, নাসারা, খ্রিষ্টান তারা সকলে একতা মানে যার কারনে তারা পৃথিবীর যেখানে যায় সেখানেই তাদের জয়। আর মুসলিমদের মধ্যে ঐক্য না থাকার কারনে তারা বার বার পরাজিত হচ্ছি। আফগান ফিরিস্তিন, ভারত বাংলাদেশ…
একবার উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) ও আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ (রা.) একসাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অভিযানে ছিলেন। মুসলমানদের মধ্যে কিছু মতবিরোধ দেখা দিয়েছিল। উমর (রা.) বললেন, "আমরা যদি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুসরণ করি, তবে আমাদের মাঝে কোনো বিভক্তি থাকবে না।" এরপর তিনি সবাইকে একত্রিত করে বলেন, "আমরা সবাই এক উম্মত, আমাদের কাজ একটাই—আল্লাহর দ্বীন কায়েম করা।" তাঁর কথায় সবাই একমত হন এবং ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়। আরো একটি ঘটনা হচ্ছে সালাহউদ্দিন আইউবির নেতৃত্বে উম্মতের ঐক্য। ক্রুসেড যুদ্ধের সময় মুসলমানদের মধ্যে ঐক্যের অভাব ছিল। মুসলিম শাসকরা নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ করছিলেন, ফলে…
"ঐক্যবদ্ধ হওয়ার একটা ঘটনা বর্ণিত হয়েছে- লোকমান হাকিম রহঃ তার সন্তানদের ডেকে সবার হাতে একটা করে লাঠি দিলেন তার পর তিনি তাদের বললেন তোমরা এগুলো ভেঙ্গে ফেলো, তারা সবাই খুব সহজে ভেঙ্গে ফেললো। অতপর তিনি তাদের হাতে দেয়া লাঠি গুলোর সম পরিমান লাঠি একত্রিত করে এক জনের হাতে দিলেন তিনি তা ভাঙ্গে অক্ষম হলেন, পর্যায় ক্রমে সবাই চেস্টা করে ব্যর্থ হলেন। অতপর তিনি বললেন তোমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে ঠিক এভাবেই মজবুত থাকবে।"
" উতবাহ বিন উবাইয়ের(লানত তার প্রতি),এক পাথর উঠিয়ে নবীজি (সাঃ) এর দিকে ছুড়ে মারে, এতে করে তিনি (সাঃ)পড়ে যান,মাথার পেছনে আঘাত পান এবং নবীজি (সাঃ) এর দাঁত মোবারক ভেঙে যায়,চেহারা রক্তাক্ত হয়ে যায়।সাহাবীগন(রাঃ) মনে করেন আমাদের হাবিবুল্লাহ, রসূলুল্লাহ(সাঃ) শহীদ হয়ে গেছেন।এতে করে সাহাবীগণ কান্না শুরু করে দিলেন।কিছুক্ষণ পর নবীজি (সাঃ) এর জ্ঞান ফিরে আসে। কী মনে হয় আসলে?বদ দো'আ কী উতবাহ বিন উবাইয়ের এর জন্য ফরজ হয়ে গেছে না? সাহাবাীরা(রাঃ) এটাই বলা শুরু করলেন।কিন্তু সুবহানাল্লাহ, নবীজি (সাঃ) দো'আ করলেন ""হে আমার রব!আপনি আমার জাতি কে ক্ষমা করুন!তারা আমাকে চিনে না!""…
উম্মতের ঐক্য:- ছোটবেলা থেকেই আমরা এক কৃষকের এবং তার ছেলেদের গল্প শুনে এসেছি, ঐ কৃষকের ছেলেরা সময় সময় ঝগড়া-ফাসাদ, হিংসা-বিদ্বেষ ও মতানৈক্যে লিপ্ত দেখে কৃষক একদিন তাদের ডেকে একটি বুদ্ধি বের করলেন। তিনি ছেলেদের প্রত্যেককে একটি করে লাঠি আনতে বললেন এবং সে সবাইকে নিজ নিজ লাঠি ভাঙ্গতে বললেন। সবাই সহজেই নিজেদের লাঠি ভেঙ্গে ফেললো। কৃষক পুনরায় প্রত্যেককে একটি করে লাঠি আনতে বললেন এবং সবগুলো লাঠি একসাথে বাধতে বললেন। লাঠিগুলো বাধা শেষে কৃষক এবার লাঠির বান্ডেলটিকে ভাঙ্গতে বললেন। প্রত্যেকেই বান্ডেলটিকে ভাঙতে অনেক চেষ্টা করেও বান্ডেলটি ভাঙ্গতে পারলোনা। কৃষক এর মাধ্যমে বুঝালো…
উম্মতের ঐক্য: হযরত সালমান ফারসি (রা.)-এর ঘটনা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সময় একবার মুহাজির (মক্কা থেকে হিজরত করা সাহাবি) ও আনসার (মদিনার স্থানীয় সাহাবি) সাহাবিদের মধ্যে একটি ছোট ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তাদের মধ্যে কিছু কথা কাটাকাটি হলে এক মুহাজির সাহাবি বললেন, "হে মুহাজিরগণ! আসো, আমরা একসঙ্গে থাকি।" আর এক আনসার সাহাবি বললেন, "হে আনসারগণ! তোমরাও একত্রিত হও!" রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন এ ঘটনা শুনলেন, তখন তিনি রাগান্বিত হয়ে বললেন, "তোমরা কি আবার জাহিলিয়াতের (অজ্ঞতার যুগের) দিকে ফিরে যেতে চাচ্ছ? যখন আমি এখনো তোমাদের মাঝে আছি!" তিনি তখন বললেন, "সব মুসলমান ভাই ভাই। মুহাজির…
"ইসলামের শুরুর দিন গুলো থেকে মুমিনগণের মধ্যে ঐক্য ছিল অপরিহার্য, যা ছিল ইসলামকে বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠিত করার পেছনে অন্যতম নিয়ামক। উম্মতের ঐক্যের ব্যাপারে চিন্তা করলে যাদের ঘটনা আমার মনে সবথেকে বেশী দাগ কাটে তারা হলেন মুহাজির ও আনসার সাহাবীগণ। যখন মুহাজির সাহাবীরা হিজরত করে মদীনায় আসলেন তখন আনসারদের ও অর্থনৈতিক অবস্থা খুব বেশী শক্তিশালী ছিলো না, তবুও তারা সানন্দে আল্লাহ ও তার রাসুলের আদেশ মেনে মুহাজির সাহাবীদেরকে নিজের পরিবার, সম্পদে শরীক করে নেন। কিন্তু বনী মুসত্বালাকের যুদ্ধে তুচ্ছ এক ঘটনা কে কেন্দ্র করে এক আনসার ও মুহাজির সাহাবীর মধ্যে ঝগড়া বেধে…
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেছেন, ❝ মুমিনগণ তোমরা পরস্পর ভাই ভাই ❞। আমরা সবাই নবী সাঃ এর উম্মত। এক ই দেহ ও পরস্পর অবিচ্ছেদ্য। অথচ বর্তমানে মুসলিম হয়েও একে অপরের দোষ অন্বেষণ করা, গীবদ - হাসাদে লিপ্ত হওয়া, মিথ্যা অপবাদ, কু ধারণা করে বিদ্রুপ করা এসব ই যেন হয়ে গেছে আমাদের একমাত্র ফিতরাত। দাওয়াতের ক্ষেত্রে দ্বীনের কিছু বিষয় নিয়ে বিরোধ ও মতভেদ কখনো খারাপ নয় তবে আমারা সেই বিরোধের জের ধরে ব্যক্তিগত আক্রমণ তথা এমন আরো কিছু কাজ করি যেন ভুলেই যাই প্রতিপক্ষ আমাদের ই মুসলিম দাঈ ভাই। দাঈ ভাই হিসেবেও…
উসমান ইবনে আফফান রা. ওফাতের পর, আলী রা. এবং মুয়াবিয়া রা. মাঝে খেলাফত নিয়ে বিভেদ হয়, যেটা সিফফীনের যুদ্ধ পর্যন্ত চলে যায়। পরবতীতে খারেজিরা আলী রা. শহীদ করে। আলী রা. মৃতু্্যর দুইদিন পর হাসান বিন আলী রা. কাছে কুফার লোকেরা বাইয়াত গ্রহণ করে। এদিকে মুয়াবিয়া রা.ও খেলাফতের দাবি ছাড়েন নি। এসময় কয়েকজন সেনাপতি হাসান রা. কে মুয়াবিয়া রা. সাথে খেলাফত নিয়ে যুদ্ধ করতে প্ররোচিত করে। কিন্তু তিনি কোনো যুদ্ধ বিগ্রহের ইচ্ছা পোষণ করলেন না। তিনি মনে করেন, মুসলিম উম্মাহর বিভক্তি নাগরিক ও রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। উত্তম সিদ্ধান্ত হচ্ছে, উম্মতের ঐক্যের…
"বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য যেন অকল্পনীয় এক বিষয়। ৯০% মুসলিমদের দেশে সকলে যেখানে এক উম্মাহর অংশ, পরস্পর ভাই-ভাই হওয়ার কথা; সেখানে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ না হয়ে পরস্পর জড়িয়ে রয়েছে বিবাদে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে অস্ত্র উঠানোর পরিবর্তে রুখে দাঁড়িয়েছে নিজেদেরই বিরুদ্ধে। মুসলিম উম্মাহর ঐক্য রক্ষা করা ইসলামের একটি মৌলিক বিধান। উম্মাহ সেই বিধানকে পাশে ফেলে অতি ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর বিষয় নিয়েও বিভক্ত হয়ে পড়েছে দলে-উপদলে। মুসলিম উম্মাহ তো এমন এক পরিবারের মতো যেখানে প্রত্যেকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একে-অপরকে ভালোবাসবে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, "" তোমরা ততদিন জান্নাতে যেতে…
উম্মাতের ঐক্য বলতে উম্মতের মদ্ধে একতাকে বুঝায়।পুরো মুসলিম বিশ্বের এক হওয়ার জন্ন্যে উম্মাতের মদ্ধে ঐক্য থাকা দরকার। যদি কোনো দল ঐক্যবদ্ধ না থাকে তাহলে তৃতীয় পক্ষের জন্য সেই দল কে ভাঙা অনেক সহজ হয়ে যায় । আমি এখানে ও রাসুলুল্লাহ সাঃ একটি গঠনা তুলে ধরব , ইনশাআল্লাহ খন্দক যুদ্ধ যা ,৬২৭ খিঃ হয়েছিল। এটি মদিনার মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি বড় পরীক্ষা ছিল । এই যুদ্ধে মক্কার কুরাইশ বাহিনী ও তাদের মিত্র বাহিনী বিশাল সংখ্যক সৈন্য নিয়ে মদীনা আক্রমণ করতে আসছে।মদিনা আক্রমণের হুমকির মুখে যখন মুসলিমরা সমাধানের পথ বের করছিল তখন…
অনেক বছর আগের ঘটনা। আব্বা একদিন শখ করে আম্মাকে আটটা মুরগী লালন-পালন করার জন্য এনে দিলেন। আমাদের বাসার সামনে কিছু অংশে বাগান ছিল। ওরা এই ছোট এরিয়াতে ঘুরাফেরা করতে সাচ্ছন্দ্য বোধ না করায়; প্রতিদিন দল বেঁধে বাহিরে যেতো এবং অক্ষত ভাবে সবাই ফিরেও আসতো। কিছুদিন পর আম্মা দেখলেন দু-তিনটে মুরগী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাই তিনটে মুরগী আম্মা জবেহ করলেন। মুরগীর দল ছোট হয়ে যাওয়ার পরেও তারা দলবেঁধেই প্রতিদিন বাহিরে যেতো। এ-র কিছুদিন পর একটা ছাড়া বাকি সবগুলোকেও জবেহ করতে হলো। সবশেষে সেই একটি মুরগী-ই সঙ্গী বিহীন ঘুরতে গেলো। দিনশেষে রক্তাক্ত…
"রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জীবদ্দশায় সাহাবীদের বারবার ঐক্যের গুরুত্ব মনে করিয়ে দিয়েছেন।সাহাবীরা ছিলেন তাঁর সবচেয়ে কাছের মানুষজন।তাঁরাও চেষ্টা করেছেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রেখে যাওয়া আদর্শের উপর জীবন কাটাতে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুপস্থিতিযে সাহাবীদের মধ্যে বিভেদ ভুলে ঐক্য বজায় রাখার প্রথম প্রচেষ্টা এই ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের পর তাঁকে দাফন করার আগেই একজন খলিফা বা নেতা নির্বাচনের দাবি উঠে। 'কে হবে খলিফা' এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করে সাহাবীদের মধ্যেই বিভেদের সম্ভবনা ঘনীভূত হতে থাকে। প্রথমে, আনসারগণ 'সাকিফা বানু সাঈদা' নামক স্থানে একত্রিত…
সুলতান আবদুল হামিদ দ্বিতীয়ের থিওডর হার্জলের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা উম্মতের ঐক্য ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার এক গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ। যদিও ওসমানীয় সাম্রাজ্য অর্থনৈতিক সংকটে ছিল, তিনি ইসলামের পবিত্র ভূমিকে অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করতে অস্বীকার করেন। হার্জলের মূল উদ্দেশ্য ছিল ফিলিস্তিনে শুধু বসতি স্থাপন নয়, বরং একটি জায়নিস্ট রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা, যা ওসমানীয় খেলাফতের জন্য হুমকিস্বরূপ ছিল। মুসলিম বিশ্বের খলিফা হিসেবে তিনি ফিলিস্তিনের পবিত্রতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা নিজের দায়িত্ব হিসেবে দেখেছিলেন। তাই, তাঁর প্রতিক্রিয়া ছিল দৃঢ় ও অটল: "তোমরা যদি আমাকে সমগ্র পৃথিবীর সমান স্বর্ণ দাও, কেবলমাত্র ১৫০ মিলিয়ন ইংরেজি পাউন্ড স্বর্ণ…
অপেক্ষা করুন
0