Answered: স্ত্রী উপর কুরবানী ফরজ। স্বামী আদায় করে দিলে হবে।

প্রশ্নঃ১/ – স্ত্রী উপর কুরবানী ওয়াজিব হলে। স্বামী তার নিজস্ব অর্থ দিয়ে স্ত্রী অনুমতি নিয়ে স্ত্রী পক্ষ থেকে আদায় করলে। স্ত্রী পক্ষ থেকে কি কুরবানী আদায় হয়ে যাবে? নাকি স্ত্রী কে নিজের নিসাব পরিমাণ সম্পদ থেকে অর্থ দিয়ে কুরবানী করতে হবে আলাদা।
২/ স্বামী ও স্ত্রী দুজনে মিলে কুরবানী করলে কি দুজনের পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে? যেমন স্বামী ৪০০০০আর স্ত্রী ১৫০০০ টাকা
৩/ কারো যদি ৫০/৬০ হাজার টাকা ক্যাশ থাকে তার জন্য কি কুরবানী করা ওয়াজিব হবে?

————-উত্তর————-

জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৮২৭৩, ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাকেম ৭৫৬৫-৭৫৬৬)
শরীয়তের বিধান হলো,প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।
আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। 
সুতরাং কাহারো কাছে যদি স্বর্ণের পাশাপাশি টাকা থাকে,তাহলে তার জন্য করনীয় হলো এই টাকা আর উক্ত স্বর্ণের মূল্য হিসেব করে সারে বাহান্ন ভরি রুপার সমমূল্য হয়েছে কিনা?
হলে তার উপর যাকাত,কুরবানী আবশ্যক হবে।
যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ হতে যিলহজ্ব মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্ত, এ সময়ের মাঝে কোনো সময়ে আপনি যদি সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি সমপরিমাণ মূল্যের (প্রায় ৯০০০০+ টাকার) মালিক হোন,আর তাহা যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত হয়,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে, নতুবা কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
(০১)
 স্ত্রী উপর কুরবানী ওয়াজিব হলে,স্বামী তার নিজস্ব অর্থ দিয়ে স্ত্রীর অনুমতি নিয়ে স্ত্রীর পক্ষ থেকে কুরবানী আদায় করলে স্ত্রী পক্ষ থেকে কুরবানী আদায় হয়ে যাবে।
(০২)
স্বামী ও স্ত্রী দুজনে মিলে কুরবানী করলে  দুজনের পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে।
এক্ষেত্রে গরু বা মহিষ ইত্যাদি পশু দিয়ে কুরবানী দিলে উভয়ের টাকা সমান সমান দিতে হবে অর্থাৎ গরুর মূল্য ৭০ হাজার টাকা  হলে ৩৫ হাজার ৩৫ হাজার টাকা করে দুইজনের প্রদান করতে হবে।
হ্যাঁ যদি ৭০ হাজার টাকা মূল্য দিয়ে গরু ক্রয় করে সেই গরুতে সাত ভাগ দেওয়া হয়, তার মধ্যে স্ত্রী এক ভাগ নেয়, সেক্ষেত্রে প্রত্যেক ভাগে যেহেতু 10 হাজার টাকা করে, তাই স্ত্রী এ ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা দিয়ে সে গরুর একভাগ নিতে পারবে।
আর যদি ছাগল ভেড়া ইত্যাদি দিয়ে কুরবানী দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে আলাদা আলাদা দুটি ছাগল হতে হবে
(০৩)
কারো যদি শুধুমাত্র ৫০/৬০ হাজার টাকা ক্যাশ থাকে, অন্য কাউকে কোন টাকা খরচ না দিয়ে থাকে এবং তার মালিকানায় যদি কোন স্বর্ণ, রুপা, ব্যবসায়ীক পণ্য ইত্যাদি কিছুই না থাকে, এবং তার মালিকানায় যদি জমি জমা বাসা বাড়ি আসবাবপত্র ইত্যাদি হতে প্রয়োজন অতিরিক্ত কিছু না থাকে,সেক্ষেত্রে তার উপর  কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

অপেক্ষা করুন

0