আসসালামু আলাইকুম,
১।আমার স্বামী যিহার করেছে।আমি তাকে ব্যপার টা জানালে সে আমাকে বলে তার পক্ষে কাফফারা দেয়া সম্ভব নয়। আমাদের মধ্যে তো তাহলে সব হারাম। এখন আমার জন্য করনীয় কি তাকে ছেড়ে দেয়া? বিয়ে শেষ করা? সামাজিক কারনে তাও সম্ভব না। এখন বাধ্য হয়ে এই হারাম সম্পর্কে থাকতে হচ্ছে।।এতে কি আমার ইমান নষ্ট হয়ে যাবে?? আমি অনেক নিরুপায়।
২।”যারা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে যিহার করে, তারপর তারা তাদের উক্তি ফিরিয়ে নেয়, তাদের জন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একজন দাস মুক্তির বিধান দেয়া হলো। এটা তোমাদের জন্য নির্দেশ। আর তোমরা যা কিছুই করনা কেন,
সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সবই জানেন। এ ছাড়া যে ব্যক্তি গোলাম অর্থাৎ দাস আজাদ করার ক্ষমতা রাখে না তারজন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একটানা ২মাস রোযা রাখতে হবে। আর যে ব্যক্তি এটারও সামর্থ্য রাখে না,
তাহ’লে তাকে ৬০জন মিসকিন অর্থাৎ গরীব মানুষকে খানা খাওয়াতে হবে। এই বিধান এ জন্য যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপরে তোমরা ঈমান রাখ।
এটা আল্লাহর সীমারেখা। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (আল- মুজাদালাহ,৩-৪)
— এখানে আল্লাহ বলেছেন “এই বিধান এই জন্য যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের উপরে তোমরা ইমান রাখ।
এটা আল্লাহর সীমারেখা। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি।”
এ দ্বারা আল্লাহ কি এটা বুঝিয়েছেন যে কেউ কাফফারা না দিয়ে তার স্ত্রীকে স্পর্শ করলে কাফির হয়ে যাবে?? তার ইমান নষ্ট হয়ে যাবে।বিধান এ বিশ্বাস করলেও কাফফারা কোনো কারনে না দিলে ইমান নষ্ট হয়ে যাবে?? কাফফরা না দিলেই কাফের হয়ে যাবে?? ( আমরা আল্লাহর এই বিধানে ইমান এনেছি বিশ্বাস স্থাপন করেছি)
৩। যিহার এ সম্পর্ক হারাম হয়ে যায় তাহলে ১ বার যিহার করলে ১ তালাক হয়?? ২ বার করলে ২ তালাক??
৪। আমার স্বামী কাফফারা দিতে চায় না।।এটা তার জন্য অসম্ভব সে বলে।।এখন আমার করনীয় কি?? এখন তো সব হারাম এই অবস্থায় তালাক নেয়া সম্ভব?? আর সে আমাকে তালাক দিতেও রাজি নয়।।
৫। স্ত্রী স্বামীর হয়ে যিহার এর কাফফারা এর রোজা রেখে দিতে পারবে?
————-উত্তর————-
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
যিহার করলে কাফফারা আদায় ব্যতীত স্বামীর জন্য স্ত্রীকে স্পর্শ করা বা তার সঙ্গে একত্রে সংসার করা হারাম।
যিহার করলে কাফ্ফারা আদায় করতে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
وَالَّذِيْنَ يُظٰهِرُوْنَ مِن نِّسَائِهِمْ ثُمَّ يَعُوْدُوْنَ لِمَا قَالُوْا فَتَحْرِيْرُ رَقَبَةٍ مِّنْ قَبْلِ أَن يَّتَمَاسَّا ذٰلِكُمْ تُوْعَظُوْنَ بِهِ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرٌ”
فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ شَہۡرَیۡنِ مُتَتَابِعَیۡنِ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّتَمَآسَّا ۚ فَمَنۡ لَّمۡ یَسۡتَطِعۡ فَاِطۡعَامُ سِتِّیۡنَ مِسۡکِیۡنًا ؕ ذٰلِکَ لِتُؤۡمِنُوۡا بِاللّٰہِ وَ رَسُوۡلِہٖ ؕ وَ تِلۡکَ حُدُوۡدُ اللّٰہِ ؕ وَ لِلۡکٰفِرِیۡنَ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۴﴾
(سورۃ المجادلۃ:۲،۳،۴)
“যারা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে যিহার করে, তারপর তারা তাদের উক্তি ফিরিয়ে নেয়, তাদের জন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একজন দাস মুক্তির বিধান দেয়া হলো। এটা তোমাদের জন্য নির্দেশ। আর তোমরা যা কিছুই করনা কেন,
সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সবই জানেন। এ ছাড়া যে ব্যক্তি গোলাম অর্থাৎ দাস আজাদ করার ক্ষমতা রাখে না তারজন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একটানা ২মাস রোযা রাখতে হবে। আর যে ব্যক্তি এটারও সামর্থ্য রাখে না,
তাহ’লে তাকে ৬০জন মিসকিন অর্থাৎ গরীব মানুষকে খানা খাওয়াতে হবে। এই বিধান এ জন্য যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপরে তোমরা ঈমান রাখ।
এটা আল্লাহর সীমারেখা। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (আল- মুজাদালাহ,৩-৪)।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা। তবে হারাম সংসারের গুনাহ অব্যাহত ভাবে হবে।
আপনার স্বামী যদি কাফফারা আদায় না করে, সেক্ষেত্রে কাফফারা আদায় করতে যে পরিমাণ টাকা লাগে তা আপনার স্বামীকে আপনি দিয়ে কাফফারা আদায়ের ব্যবস্থা করাতে পারেন।
(০২)
কাফফারা না দিয়ে তার স্ত্রীকে স্পর্শ করলে কাফির হয়ে যাবেনা, তার ইমান নষ্ট হয়ে যাবেনা।
তবে তাদের ঘর সংসার হারাম হবে।