Answered: দ্বীনি কাজে বাবা-মায়ের হুকুম মানা, আত্মীয়তা, ad blocking এর বৈধতা সম্পর্কে

একজন বালেগ ছেলে, বাবা-মায়ের অধীনে থাকি এবং এখনও ইউনিভার্সিটিতে উঠিনি। আমি দ্বীনি কাজ করতে আগ্রহী, কিন্তু বাবা-মা পড়াশোনার বাইরে অন্য কিছুতে মনোযোগ দিতে(বা ‘করতে’ও বলতে পারেন) একপ্রকার না/নিষেধ করেছেন। মা যদিও বলেছেন Uni তে উঠার পরে তাঁরা আর তেমন কিছু বলবেন না, কিন্তু বাবার পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সন্দেহ রয়েছে (হয়তো কিছুটা restrictions লাগিয়ে দেবেন বা তিনি আমাকে যা বানাতে চান তার জন্য কিছুটা তাগাদা দিবেন, যার অন্যতম কারণ হিসেবে তিনি উক্ত জায়গা থেকে বিভিন্ন দ্বীনি কাজ করতে পারবো অথচ সেটা হওয়ার আমার তেমন কোন ইচ্ছা হয়তো থাকবে না(বা alrady নেই বলতে পারেন), ফলে আমি আবার সেই সন্দেহের মধ্যে পড়ে যাবো, বাবা মায়ের কথা শুনবো কি না তা নিয়ে)।

1) দ্বীনি কাজ করার ক্ষেত্রে (যেমন কোন কিছু লিখে পোস্ট করা, share করা, মানুষকে দাওয়াত দেওয়া, দ্বীনি কাজে সময় দেয়া, দ্বীনি ভাইদের সময় দেয়া,কিছু কথা বলা বা গল্প করা, মসজিদে সময় দেয়া, কোন প্রজেক্টে বা প্রজেক্টের উন্নয়নে কাজ করা বা সময় দেয়া, কোন কিছু বিলি করা ইত্যাদি) তাঁদের কথা শোনার কি হুকুম? অর্থাৎ এরকম কাজগুলো করতে পারবো কি? এক্ষেত্রেও আমি তাকওয়ার উপর আমল করতে চাই এবং সন্দেহের মধ্যে যেতে চাই না। উল্লেখ্য তাঁরা সম্ভবত আমার পড়াশোনার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করেন (এবং সত্যি বলতে কি আমার রেজাল্ট আপাত দৃষ্টিতে খারাপই বটে) কিন্তু আমার মনে হচ্ছে অন্তত intermediate পড়ার সময়ে ভালো রেজাল্ট করার পরও তারা খুব একটা ছাড় দিতে রাজি না-ও হতে পারে। সম্পূর্ণ বা প্রায় সম্পূর্ণ ছেড়ে দেওয়াতো ইন-শা-আল্লাহ অন্তত এই সময় হবে না।

2) বাবা-মায়ের টাকা যা তারা বিভিন্ন কাজে দিয়ে থাকেন সেগুলো থেকে দান-সদকাহ করা যাবে কি? করলে কি পরিমান? কাজ বলতে বাবা-মায়েরা সচরাচর যে সমস্ত কাজে(যেমন যাতায়াত ভাড়া, কিছু খাওয়ার টাকা ইত্যাদি) টাকা দেন। উল্লেখ্য, আশা করা যায়, কিছু টাকা সদকাহ করলে তাঁরা তেমন কিছু মনে করবেন না, কিন্তু আমি তাকওয়ার উপর আমল করতে চাই এবং সন্দেহের মধ্যে যেতে চাই না।

3) বাবা-মাকে না বলে আমি যদি কোথাও যাই তবে কি পাপ হবে/এর হুকুম কি? যেমন বাসায় ফেরার সময় কেউ বলল, চলো একটু হেঁটে আসি বা ওখানে একজন ওয়ায করছেন/বক্তব্য দিচ্ছেন শুনে আসি ইত্যাদি আর ফোন না থাকার দরুন তাৎক্ষনিক না জানিয়ে কিছু সময়ের জন্য ওখানে গেলাম।

4) এক নিকটাত্মীয় UCB-তে(একটি ব্যাংক) চাকরি করে। তার তেমন বিশেষ কোন হালাল উপার্জন সম্পর্কে আমার জানা নেই। উনি share এ কন্ট্রাকটরি করে থাকেন কিন্তু এর মূলধন (আমার আন্দাজ) ব্যাংকের বেতন থেকেই। বাড়িতে জমি আছে কিন্তু তা থেকে টাকা লাভ হয়,/পান,/নেন বলে মনে হয় না। উনার বাসায় যাওয়া, থাকা, খাওয়া কি জায়েজ হবে(প্রয়োজনে বা ঘুরতে)? দাওয়াত দিলে কি করণীয়? বাবা-মাও যদি যেতে বলে এবং না গেলে অন্যদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়?

5) আত্মীয়দের বাড়িতে না গেলে বা দীর্ঘদিন কথা না বললে কি আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে বলে ধরা হবে? আর আমার আত্মীয়র ক্ষেত্রে এই হুকুম কি হবে?

6) বাড়িতে এক আত্মীয়ের বিয়ে। সম্ভাবনা আছে সেখানে গান হবে, এবং নারী-পুরুষের অবাধ না হলেও মেলামেশা থাকবে ইন-শা-আল্লাহ (কিছুটা modest গ্রামে যেমনটা হতে পারে)। যাওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই অবশ্য, কিন্তু এমনিতে হুকুম কি হবে?

7) Ad blocker, tracker blocker ইত্যাদি service ব্যাবহার করা কি জায়েজ? কারণ অনেকেই ইউটিউবে, ফেসবুক blocker ব্যবহার করে থাকে, কিন্তু আমার জানামতে এগুলো তাদের(YT ,FB etc) ‘Terms of Service’ এর লঙ্ঘন। তাদের টাকা উপার্জনের মাধ্যম ad, সুতরাং ফ্রীতে তাদের সার্ভিস ব্যবহার করা আবার ad আটকে দেওয়া যে তারা allow করবে না তা ইন-শা-আল্লাহ খুবই স্বাভাবিক (যদিও ad blocker detect করার পরেও তারা সবসময় তাদের সার্ভিস ব্যবহারে সম্পুর্ণ বাধা দেয় না, কিন্তু আমার জানামতে তারা এসবের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে ad block করা না যায়(source: ChatGPT))। আবার ad block করার অন্যতম কারণ ad এ এমন কিছু আসা যা পাপের কারণ হতে পারে ইন-শা-আল্লাহ। এক্ষেত্রে হুকুম কি হবে? আর বিকল্প কি হতে পারে?

দয়া করে উত্তর দিবেন। নিকটস্থ ‘আলেমের নিকট refer না করলে ভালো হয়(আপনারা যদিও ইন-শা-আল্লাহ কারণেই করে থাকেন, তারপরেও…..)।

Additionally, https://ifatwa.info/119099/ এই প্রশ্নটির 5 নং এ আমাকে কমেন্ট করে জানাতে বলা হয়েছিল। Reply পাইনি তাই লিখছি?

আর আমি যদি এক প্রশ্নের ভেতর অনেকগুলি প্রশ্ন করি, তাহলে কি Ifatwa এর নিয়ম ভঙ্গ হয়? আমি কি মাসে 4টির বেশী প্রশ্ন করতে পারবো?

————-উত্তর————-

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ﻭَﻗَﻀَﻰ ﺭَﺑُّﻚَ ﺃَﻻَّ ﺗَﻌْﺒُﺪُﻭﺍْ ﺇِﻻَّ ﺇِﻳَّﺎﻩُ ﻭَﺑِﺎﻟْﻮَﺍﻟِﺪَﻳْﻦِ ﺇِﺣْﺴَﺎﻧًﺎ ﺇِﻣَّﺎ ﻳَﺒْﻠُﻐَﻦَّ ﻋِﻨﺪَﻙَ ﺍﻟْﻜِﺒَﺮَ ﺃَﺣَﺪُﻫُﻤَﺎ ﺃَﻭْ ﻛِﻼَﻫُﻤَﺎ ﻓَﻼَ ﺗَﻘُﻞ ﻟَّﻬُﻤَﺂ ﺃُﻑٍّ ﻭَﻻَ ﺗَﻨْﻬَﺮْﻫُﻤَﺎ ﻭَﻗُﻞ ﻟَّﻬُﻤَﺎ ﻗَﻮْﻻً ﻛَﺮِﻳﻤًﺎ
তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/778
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1722
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1707
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) মাতাপিতার নিষেধ সত্বেও দ্বীনি কাজ করতে পারবেন। (যেমন কোন কিছু লিখে পোস্ট করা, share করা, মানুষকে দাওয়াত দেওয়া, দ্বীনি কাজে সময় দেয়া, দ্বীনি ভাইদের সময় দেয়া,কিছু কথা বলা বা গল্প করা, মসজিদে সময় দেয়া, কোন প্রজেক্টে বা প্রজেক্টের উন্নয়নে কাজ করা বা সময় দেয়া, কোন কিছু বিলি করা ইত্যাদি) এগুলো করতে পারবেন। এক্ষেত্রে মাতাপিতার খেদমতে কোনো সমস্যা না হলে আপনি করতে পারবেন। তবে লেখা পড়ার কোনো ব্যাঘাত যেন না ঘটে, সেদিকে যথেষ্ট খেয়াল রাখতে হবে। 
(২) বাবা-মায়ের টাকা যা তারা বিভিন্ন কাজে দিয়ে থাকেন সেগুলো থেকে দান-সদকাহ করা যাবে না। বরং মাতাপিতার অনুমতি নিয়েই দান সদকাহ করতে হবে। 
(৩) বাবা-মাকে না বলে আপনি কাছাকাছি কোথাও যেতে পারবেন। 
(৪) তাকওয়ার দাবী হল, এমন আত্মীয়র বাড়ীতে দাওয়াত খেতে না যাওয়া।
(৫) আত্মীয়দের বাড়িতে না গেলে বা দীর্ঘদিন কথা না বললে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে বলে ধরা হবে না।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1517
(৬)  যেখানে গান বাজনা হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে যাওয়া যাবে না।
(৭) Ad blocker, tracker blocker ইত্যাদি service ব্যাবহার করা জায়েয।কেননা গোনাহ থেকে বেচে থাকা ওয়াজিব।
এক প্রশ্নের ভেতর অনেকগুলি প্রশ্ন করা হলে Ifatwa এর নিয়ম ভঙ্গ হবে। মাসে 4টির বেশী প্রশ্ন করা যাবে না।

অপেক্ষা করুন

0