Answered: উক্ত নাম গুলো রাখা ঠিক হবে কিনা?

আস সালামু আলাইকুম

আফরাহ নুরিন ফাতিহা (মেয়ে)

ইয়াসির হামদান সীরাত (ছেলে)

আবদুল্লাহ জুবায়ের নাবহান (ছেলে)

আহমাদ ফাওজান মাহির (ছেলে)
ইসলামী দৃষ্টিকোণে উক্ত নাম গুলো রাখলে কোন সমস্যা নাই তো?

আর আরবি ব্যাকরণ গত দিকে দিয়েও সঠিক কিনা জানতে চাচ্ছি।

জাজাকাল্লাহু খায়রন

————-উত্তর————-

জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم
ভালো নাম রাখা পিতা-মাতার সর্বপ্রথম দায়িত্ব। আমরা এভাবেও বলতে পারি যে, পিতা-মাতার উপর সন্তানের সর্বপ্রথম হক হচ্ছে, তার জন্য সুন্দর নাম নির্বাচন করা।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. ও  আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
من حق الولد على الوالد أن يحسن اسمه ويحسن أدبه.
অর্থ : সন্তানের সুন্দর নাম রাখা ও তার উত্তম তারবিয়াতের ব্যবস্থা করা বাবার উপর সন্তানের হক। -মুসনাদে বাযযার (আলবাহরুয যাখখার), হাদীস ৮৫৪০
হযরত আবুদ দারদা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
إِنّكُمْ تُدْعَوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِأَسْمَائِكُمْ، وَأَسْمَاءِ آبَائِكُمْ، فَأَحْسِنُوا أَسْمَاءَكُمْ.
কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে ডাকা হবে তোমাদের ও তোমাদের বাবার নাম নিয়ে (অর্থাৎ এভাবে ডাকা হবে- অমুকের ছেলে অমুক)। তাই তোমরা নিজেদের জন্য সুন্দর নাম রাখ। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯৪৮
,
আরো জানুনঃ 
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
(০১) আফরাহ নুরিন ফাতিহা (মেয়ে)
عَفْرَة ، عُفْرَة
[‘আফ্রাহ, ‘উফ্রাহ] শব্দের অর্থঃ-
(ঘোড়া বা সিংহের) কেশর।
আফরাহ (Afrah) নামের অর্থ:
আনন্দসমূহ, খুশি, উল্লাস, উৎসব
এটি “ফারাহ” (فرح) শব্দ থেকে ইসমে তাফজিল। অর্থ অধিক উল্লাসি একজন ব্যাক্তি।
নুরিন (Nurain) অর্থ:
“দুটি আলো” বা “দ্বি-আলো”
“নূর” (نور) মানে হলো “আলো”
আর “নুরাইন” বা “নুরিন” (نورين) হলো “দুটি আলো” – এখানে দ্বিবচন রূপ ব্যবহৃত হয়েছে।
فَاتِحَة ج فَوَاتِح [فتح]
[ফাতিহাহ] শব্দের অর্থঃ-
সূচনা
আরম্ভ
শুরু
সূত্রপাত
ভূমিকা
মুখবন্ধ
উপক্রমণিকা।
★এ নামটি ভালো,এ নাম রাখা যেতে পারে।
আরবি ব্যাকরণ গত দিকে দিয়েও সঠিক।
(০২) ইয়াসির হামদান সীরাত (ছেলে)
يَاسِر ج أَيْسَار
[ইয়াসির] শব্দের অর্থঃ-
সহজ
নরম
কসাই
বাম পাশে সংঘটিত
বাম দিকে ধরে এমন
حَمِدَ [س] (حَمْد)
[হামিদা] শব্দের অর্থঃ-
প্রশংসা করা
স্তুতি করা
স্তব করা
তারিফ করা
হামদান শব্দের অর্থঃ-
প্রশংসা করা।
صِرَاط ج صُرُط
[ছিরাত] শব্দের অর্থঃ-
পথ
পন্থা
রাস্তা।
সীরাত (Sīrah) শব্দের অর্থ:
জীবনী, জীবনচরিত, চলন বা পথ
বিশেষভাবে, এটি কোনো ব্যক্তির জীবনের কার্যকলাপ, চারিত্রিক গুণাবলি ও ইতিহাস বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
★এ নামটি ভালো,এ নাম রাখা যেতে পারে।
আরবি ব্যাকরণ গত দিকে দিয়েও সঠিক।
(০৩) আবদুল্লাহ জুবায়ের নাবহান (ছেলে)
عَبْد ج عِبَاد ، عَبِيد
[‘আব্দ] শব্দের অর্থঃ-
দাস
ক্রীতদাস
গোলাম
উপাসক
সেবক
বান্দা
اَللّه
[আল্লাহ]
আল্লাহ
সুতরাং আব্দুল্লাহ এর অর্থ আল্লাহর বান্দা/গোলাম।
জুবায়ের নামের অর্থ:
বীরপুরুষ, সাহসী, শক্তিশালী বা সাহসিকতার প্রতীক
কিছু ব্যাখ্যায় এটি “ছোট পাথর” বা “তেজস্বিতা” বোঝাতেও ব্যবহৃত হয়।
نَبِه
[নাবিহ]
বুদ্ধিমান
বিচক্ষণ
মেধাবী
সচেতন
সজাগ
বিখ্যাত
খ্যাতিমান
সম্ভ্রান্ত
মহৎ
সুতরাং নাবহান নামের অর্থ:
সতর্ক, সজাগ, স্মার্ট, বা মেধাবী
আরবি “نَبِيه” (নাবিহ) শব্দের সঙ্গে মিল রয়েছে, যার মানে হচ্ছে “বুদ্ধিমান” বা “বিখ্যাত”।
তবে বড় হা দিয়ে পড়লে এর অর্থ ভালো হয়না।মন্দ অর্থ হয়ঃ-
نَبَحَ [ض] [ف] (نَبْح ، نُبَاح ، نُبُو ح)
[নাবাহা]
(কুকুর) ঘেউঘেউ করা
ডাকা
শব্দ করা
(কবি) ব্যঙ্গ করা
নিন্দা করা
★এ নামটিও ভালো,এ নাম রাখা যেতে পারে।
আরবি ব্যাকরণ গত দিকে দিয়েও সঠিক।
(০৪) আহমাদ ফাওজান মাহির (ছেলে)
أَحْمَد [حمد]
[আহ্মাদ] শব্দের অর্থঃ-
অধিকতর প্রশংসনীয়
হযরত মুহাম্মদ (স)-এর আরেক নাম।
فَوْز
[ফাওয] শব্দের অর্থঃ-
সাফল্য
সফলতা
কামিয়াবি
কৃতকার্যতা
জয়লাভ
অর্জন
নিষ্কৃতি
সুতরাং ফাওযান (Fawjan) নামের অর্থ:
বিজয়, সফলতা, উপলব্ধি, বা উন্নতি
এটি “ফাওয” (فوز) শব্দের দ্বৈত বা অতিরিক্ত রূপ, যার মানে “জয়” বা “সফলতা”।
مَاهِر ج مَهَرَة
[মাহির] শব্দের অর্থঃ-
দক্ষ
সুদক্ষ
পটু
অভিজ্ঞ
বিচক্ষণ
বিশেষজ্ঞ
★এ নামটিও ভালো,এ নাম রাখা যেতে পারে।
আরবি ব্যাকরণ গত দিকে দিয়েও সঠিক।

অপেক্ষা করুন

0