Answered: আমার উপর যাকাত ফরজ হওয়া এবং কুরবানীর ওয়াজিব হওয়ার বিধান সম্পর্কে জানতে চাচ্ছিলাম।

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাবা মারা যাওয়ার পর ওয়ারিশ সূত্রে আমাদের বাড়িতে আমি তিন শতাংশ জায়গা পাই। আমার জায়গায় কয়েকটি রুম রয়েছে যার মধ্যে একটিতে আমি থাকতাম এবং বাকিগুলো ভাড়া দেওয়া। বর্তমান সময়ে চাকরির সুবাদে আমি বাসা ভাড়া নিয়ে ঢাকাতে থাকি এবং আমার যে রুমটি বাড়িতে আছে সেটাতে জিনিসপত্র রাখা আছে এবং বাকি রুমগুলো ভাড়া দেওয়া আছে। আমি বাড়ি থেকে মোট 26 হাজার টাকার মত ভাড়া পাই এবং যাবতীয় ইউটিলিটি বিল দেওয়ার পর 23 হাজার টাকার মত থাকে। আমার স্ত্রী দেনমোহর এবং আরো কিছু ঋণ সহ আমার কাছে মোট ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা পাওনা ছিল। আমি টাকা জমিয়ে জমিয়ে তার ঋণ শোধ করছি এবং এখনো সে আমার কাছে ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পাওনা আছে। প্রতিমাসে খরচের পর যে টাকাটা থাকে সেটাই আমি জমিয়ে জমিয়ে আমার স্ত্রীকে দেই এবং এই মুহূর্তে আমার কাছে কোন জমানো টাকা নেই।
এই পরিস্থিতিতে আমার ওপর কি যাকাত ফরজ হবে এবং কুরবানী ওয়াজিব হবে? আর আমি যে টাকা বোনাস পাব সেই টাকা দিয়ে কি আমি আমার স্ত্রীর ঋণ শোধ করবো নাকি কুরবানী দিব?

————-উত্তর————-

জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৮২৭৩, ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাকেম ৭৫৬৫-৭৫৬৬)
শরীয়তের বিধান হলো,প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।
আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। 
সুতরাং কাহারো কাছে যদি স্বর্ণের পাশাপাশি টাকা থাকে,তাহলে তার জন্য করনীয় হলো এই টাকা আর উক্ত স্বর্ণের মূল্য হিসেব করে সারে বাহান্ন ভরি রুপার সমমূল্য হয়েছে কিনা?
হলে তার উপর যাকাত,কুরবানী আবশ্যক হবে।
যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ হতে যিলহজ্ব মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্ত, এ সময়ের মাঝে কোনো সময়ে আপনি যদি সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি সমপরিমাণ মূল্যের (প্রায় ৯০০০০+ টাকার) মালিক হোন,আর তাহা যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত হয়,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে, নতুবা কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক নন।
সুতরাং আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়।
যাকাতও ফরজ নয়।
আপনি বোনাসের টাকা দিয়ে আপনার স্ত্রীর ঋণ পরিশোধ করবেন।

অপেক্ষা করুন

0