Answered: একটা ইসলামিক প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম।
https://ifatwa.info/118902/

ফতোয়াতে বলা হয়েছে, নাজায়েজ হবেনা, যদি প্রচলন থাকে যে ১ ঘন্টায় পড়িয়ে ১ হাজার টাকা নেওয়ার ।

হ্যাঁ উস্তায, আমার জানামতে এমন কোনো টিচার নেই যে কিনা, ১ মাসে শুক্রবার বাদে প্রতিদিন ১ ঘন্টা পড়িয়ে ১০০০ টাকা নেয়না! মানে আমার জানামতে সবাই ই ১০০০ নেয় অথবা এর বেশি নেয়, কিন্তু কম নেয়না। ১০০০ এর কম নেয় কেউ, এমনটা অন্তত আমার জানা নেই।
তো উস্তায আমি যখন সেই মহিলাকে বলি, আন্টি আমি যে স্কুলের টিচার বা যেসব টিচারের কাছে পড়েছি তারাও ১০০০ ই নিত,এমনকি অনেকে সপ্তাহে ৪ দিন পড়িয়েও ১০০০ টাকা নিত। তখন তিনি আমায় বলেন- “তোমার লেভেল আর তাদের লেভেল তো সমান না। তোমার লেভেল অনুযায়ী টাকা দিচ্ছি।”

(তার এই কথাটা শুনে আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি। আমি মাদরাশাতে পড়ার জন্য,আর সহশিক্ষা হারাম বলেই জেনারেল লাইন থেকে এসএসসি দেওয়ার পর চলে এসেছি, সহশিক্ষা না হারাম হলে, আমি পড়া কন্টিনিউ করে আজ কোনো মেডিকেল বা ভার্সিটিতে থাকতাম।)

তো উস্তায আমার টাকাটা নেওয়া নাজায়েজ হয়নি,তাই না?

————-উত্তর————-

জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 
শরীয়তের বিধান হলো কাহারো সম্পদ তার সন্তুষ্টি ব্যাতিত ব্যবহার করা জায়েজ হবেনা। 
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَ تِجَارَۃً عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡکُمۡ ۟ وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ بِکُمۡ رَحِیۡمًا ﴿۲۹﴾ 
হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না; কিন্তু তোমরা পরস্পর রাযী হয়ে ব্যবসা করা বৈধ এবং নিজেদেরকে হত্যা করো না; নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু।
(সুরা নিসা ২৯)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
عَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى
আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়।
আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২।
عَنْ عَبْدِ اللّٰهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «طَلَبُ كَسْبِ الْحَلَالِ فَرِيضَةٌ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ». 
 ‘আব্দুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অন্যান্য ফরয কাজ আদায়ের সাথে হালাল রুযী-রোজগারের ব্যবস্থা গ্রহণ করাও একটি ফরয। 
(শু‘আবুল ঈমান ৮৩৬৭, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১১৬৯৫,মিশকাতুল মাসাবিহ ২৭৮১)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে ঐ মহিলা আপনাকে বলেছেন- “তোমার লেভেল আর তাদের লেভেল তো সমান না। তোমার লেভেল অনুযায়ী টাকা দিচ্ছি।”
সুতরাং প্রাইভেট পড়ানোর আগেই বেতনের বিষয়টি স্পষ্ট না করায় আপনারও ভুল হয়েছে,তারও ভুল হয়েছে।
আপনাকে দিয়ে পড়ালে সে হয়তোবা ভেবেছিলো যে আপনাকে কম বেতন দিতে হবে,এই নিয়তেই আপনার নিকট পড়িয়েছে।
অন্যথায় সাধারণ টিচারদের কাছেই পড়াতো।
সুতরাং এখন করনীয় হলো সেই মহিলার সাথে সাক্ষাৎ করে প্রাইভেট পড়ানো শুরু করার আগেই বেতনের বিষয়টি স্পষ্ট না করার বিষয়টি বুঝিয়ে বলা এবং তিনি যত টাকা সন্তুষ্টি চিত্তে দিতে চান,সেটা নিয়ে তার উপর রাজী থাকা।
যেহেতু প্রাইভেট পড়ানো শুরু করার আগেই বেতনের বিষয়টি স্পষ্ট করেননি,তাই এখন জোড় করে টাকা নেয়া উচিত হবেনা।

অপেক্ষা করুন

0