“নবুয়তের দশম বছর শাওয়াল মাস ।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা থেকে দীর্ঘ ৬০ মাইল প্রায় পথ রাত জেগে , পায়ে হেঁটে অতিক্রম করেন তায়েফের উদ্দেশ্যে । সঙ্গী সাথী ছিলেন আজাদকৃত গোলাম যাঈদ ইবনুল হারিসা । যাত্রাপথে সাক্ষাৎ হয়েছে এমন কোনো গোত্র নেই যাদের কাছে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলামের মাহাত্ম্য তুলে ধরেননি , দ্বীনের পথে দাওয়াত দেননি ।। কিন্তু একটি গোত্র ও তাঁর আহ্বানে সাড়া দেয়নি ।
তায়েফে পৌঁছার পর থেকে শুরু করে সেখানে অবস্থানরত ১০ দিন পর্যন্ত তাদের মাঝের এমন কোনো গোত্র নেতা , ব্যক্তি ছিল না , যাদের কাছে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্বীনের কথা বলেন নি । প্রত্যুত্তরে তারা শুধু তাড়িয়েই দেয় নি নবিজির পেছনে তাঁর বিরুদ্ধে উচ্ছৃঙ্খল বালকদের লেলিয়ে দেয়। ফেরার পথে
তায়েফের মূর্খ ও দুষ্টুরা নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছু নেয় , পথ অবরুদ্ধ করে হইচই করে, অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে, গায়ে পাথর নিক্ষেপ করে রক্তাক্ত করে। এমন ভাবে আঘাত করে যে, তাঁর জুতাজোড়া পর্যন্ত রক্তে রঞ্জিত যায়। যাইদ ইবনুল হারিসা ঢাল হিসেবে দাঁড়িয়ে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তিনিও একসময় মাথায় আঘাত পেয়ে মারাত্মক ভাবে আহত হন।
দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কার পথে আসার সময় ‘ কারনুস সাআলিব ‘ নামক স্থানে হঠাৎ দেখতে পান তাঁর মাথার উপরে এক টুকরো মেঘ তাঁকে ছায়া দিচ্ছে। সেদিকে তাকালে জিবরিল আমিনকে দেখতে পান । তিনি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ডেকে বলেন, আপনার জাতি আপনাকে যা বলেছে এবং তারা যে উত্তর দিয়েছে , তার সবই আল্লাহ শুনেছেন। তিনি আপনার কাছে পাহাড়ের ফেরিশতা পাঠিয়েছেন। তাদের ব্যাপারে আপনি তাকে ইচ্ছা মতো আদেশ করতে পারেন। তখন পাহাড়ের ফেরিশতা নবিজিকে ডেকে সালাম দিলেন এবং তাদের উপরে আখশাবাইন অর্থাৎ মক্কার প্রসিদ্ধ দুটি পাহাড় চাপিয়ে দেওয়ার অনুমতি চাইলেন। কিন্তু উত্তরে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেও, আমি বরং আশা করি , আল্লাহ তাদের বংশে এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন,যে এক আল্লাহর ইবাদত করবে; তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না ।
উক্ত জবাবের মাধ্যমে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এমন উম্মাহর প্রতি ফিকির, সুমহান চরিত্র ফুটে উঠেছে,যা তিনি ছাড়া আর কারও মাঝে নেই ।। “